Print Date & Time : 27 August 2025 Wednesday 1:27 pm

রুশ অর্থ থেকে ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে চায় ইইউ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও রুশ ব্যবসায়ীদের যে অর্থ জব্দ করেছিল ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, সেই অর্থ থেকে ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে চান ইউরোপীয় নেতারা। ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অঙ্গসংগঠন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল রুশ এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর: তাস।

তবে জব্দ করা হলেও আইনত এ অর্থ এখনও রাশিয়া ও তার নাগরিকদের। যদি এ অর্থ ইউক্রেন বা অন্য কোনো খাতে ব্যয় করতে চান ইউরোপীয় নেতারা, তাহলে প্রথমে তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে, যা এখনও তারা করেননি।

অন্যদিকে ইউরোপের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনার বিরোধী। দেশটির ট্রেজারি বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন ও কয়েকজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, এটি বেআইনি একটি পরিকল্পনা এবং ইইউ যদি এই পদক্ষেপ নেয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে অনেক দেশ ইউরোপে বিনিয়োগ করতে ভয় পাবে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইইউয়ের এ পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটা হলো পশ্চিমের রাশিয়ার সম্পদ চুরি করার নতুন ফন্দি।

চার্লস মিশেল বলেন, ইউক্রেনকে পুনর্গঠন ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা (রাশিয়ার) জব্দকৃত অর্থ ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতারা এ ব্যাপারটি ইইউর প্রধান কার্যনির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় কমিশনে এ ব্যাপারটি লিখিত আকারে উত্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেছেন মিশেল।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপ। সেই নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে প্রথমে জব্দ করা হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে জমা থাকা ৩০ হাজার কোটি ডলার। এ অর্থের মধ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রুশ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের অর্থও রয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন ঘোষণা দেন, এখন থেকে ইউক্রেনকে প্রতি মাসে দেড়শ’ কোটি ডলার সহায়তা দেবে ইইউ। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার জব্দকৃত তহবিল থেকেই দেয়া হবে এ অর্থ। এর আগে রাশিয়ার অর্থনীতি, সামরিক ও প্রচার লক্ষ্য করে ইউরোপীয় সংসদে নিষেধাজ্ঞার ষষ্ঠ প্যাকেজের বিশদ বিবরণ দেন ইইউ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এতে তিনি সফল

হবেন না বরং তার যুদ্ধের মনোভাব নিজের দেশকে ডুবিয়ে দিচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি গত ৩১ আগস্ট রাশিয়ার নাগরিকদের ভিসার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে ইইউ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মস্কোর সঙ্গে একটি ভিসা চুক্তি স্থগিত করতে সম্মত হন। ফলে রুশ নাগরিকদের ইইউভুক্ত দেশগুলোয় প্রবেশ করা কঠিন হবে। সামরিক অভিযান চালানোর কারণে ইউক্রেন ও ইইউয়ের কিছু সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে পুরোপুরি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানায়। তবে ফ্রান্স ও জার্মানির মতো অন্য বেশ কয়েকটি দেশ সেই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে। ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে দশ লাখের বেশি রুশ নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভ্রমণ করেছেন। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি দেশ ও পূর্ব ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো বলেন, ইইউ নিজের পায়ে গুলি করছে এবং এই পদক্ষেপের জবাব দেয়া হবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা এ সিদ্ধান্তকে অর্ধেক পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করেন।