রূপগঞ্জের সঙ্গে হারল শেখ জামাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক: ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে একই দিনে হারল দুই ফেভারিট লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও আবাহনী লিমিটেড। রোববার দিনটাতে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির দেখা হলো না! টানা জয়ে উড়তে থাকা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ পথ হারাল। আবাহনী লিমিটেডের কাছে ৮১ রানে হেরে শিরোপা লড়াই থেকে কিছুটা পিছিয়ে গেল দলটি। তবে স্বস্তির খবর, একই দিন হেরেছে আরেক ফেভারিট শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাব। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কাছে হার মেনেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর অর্ধশতকে আবাহনী তুলে ২৭৯ রান। জবাবে ১৯৮ রানে অল-আউট হয়ে যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। বল হাতে আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন মাঠের ক্রিকেটে সবসময়ই অপ্রতিরোধ্য তিনি। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও বল হাতে সাফল্য পেলেন সাকিব আল হাসান। রোববার এই বাঁহাতি স্পিনার আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে তুলেন ৩ উইকেট। তারপরও অবশ্য মাশরাফি বিন মর্তুজার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে আবাহনী।
দুই ফেভারিটের ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত পেয়েছেন টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ১৪ রানের জন্য অবশ্য শতরান পেলেন না এই ব্যাটসম্যান। ফিফটি করেছেন আফিফ হোসেন ধ্রুবও।
খেলার শুরুতেই মাশরাফি সাফল্য এনে দেন রূপগঞ্জকে। নাঈম শেখকে (৬) ফিরিয়ে দেন তিনি। আরেক পেসার আল-আমিন শিকার করেন মাহমুদুল হাসান জয়কে (২২)। তারপর আফিফ ও শান্ত ১২৬ রানের জুটি গড়েন। আফিফকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন মুক্তার আলি। ৭২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রান করেন আফিফ।
এরপরই সাকিবের ম্যাজিক। প্রথম স্পেলে ৬ ওভারে উইকেটশূন্য তিনি। এরপর দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে টানা দুই ওভারে ফেরান শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। শান্ত ৮৬ রানে আউট, মোসাদ্দেক ২৮। এরপর তৌহিদ হৃদয়কেও ফেরান সাকিব। শেষ দিকে সাইফ উদ্দিন ৩ ছক্কায় ৩০ করেন।
রূপগঞ্জের অধিনায়ক মাশরাফি ৫৬ রানে তুলেন ১ উইকেট। সাকিব ৩ উইকেট নেন ৫৩ রানে। আল-আমিন ও মুক্তার নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
এরপর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পক্ষে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন সাব্বির রহমান ও রাকিবুল হাসান। তাদের ৪৭ রানের জুটি ভাঙে তানভীর ইসলামের বলে। তারপর একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে লিজেন্ডসরা। ৯৯ রানে ছয় উইকেট চলে যায়। সাব্বির ৪৫ বলে ৩৮ রান, সাকিব ৮ বলে ৩ রান, নাঈম ইসলাম ১৮ বলে ৭ রান, ইরফান শুক্কুর ৪ বলে ১ রান আর মাশরাফি করেন ১০ বলে ৯।
এরপর সপ্তম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়েন চিরাগ জনি ও তানবির হায়দার। ভারতীয় রিক্রুট চিরাগ ৫৬ বলে করেন ৪৮ রান। তারপর ব্যাটিংয়ের শেষটাও দ্রুত ফুরিয়ে যায়। তানবির ৫০ বলে ৩৬ ও মুক্তার আলি ২২ বলে করেন ২২ রান। রূপগঞ্জ অল-আউট ১৯৮ রানে। আবাহনীর ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। তবে ম্যাচের সেরা মোসাদ্দেক।
এ অবস্থায় লিগ পর্ব আর সুপার লিগ মিলিয়ে এ পর্যন্ত খেলা ১৩ ম্যাচের ১১টিতে জিতে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। শিরোপার লড়াইয়ে থাকা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অর্জন ১৮ পয়েন্ট।
রোববার বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করে শেখ জামাল। জবাব দিতে নেমে প্রাইম ব্যাংক ৪০.২ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। সেঞ্চুরি থেকে ৯০ রান তুলে দলকে জেতান তামিম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

আবাহনী লিমিটেড ২৭৯/১০ (৫০ ওভার) শান্ত ৮৬, আফিফ ৬২, সাইফউদ্দিন ৩০*, মোসাদ্দেক ২৮, হৃদয় ২৪;
সাকিব ৩/৫৩, আল-আমিন ২/৩৭।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১৯৮/১০ (৪১.৫ ওভার) চিরাগ ৪৮, সাব্বির ৩৮, তানবীর ৩৬, রাকিবুল ২৭;
মোসাদ্দেক ৪/৪০, সাইফউদ্দিন ৩/৩৫।

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৮১ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত