Print Date & Time : 6 September 2025 Saturday 8:43 pm

রূপগঞ্জ চনপাড়া বস্তিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : অপরাধীদের নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদক ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রুপ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সানি (১৭), সম্রাট পারভেজ (২১) ও রোমান (১৮) নামে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া৷ তিনি জানান, তিনজনেরই পায়ে গুলি লেগেছে ৷

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, মাদক ব্যবসায়ী শাহাবউদ্দিন ও শমসের তাদের বাহিনী নিয়ে অপর মাদক ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের বাহিনীর সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায়৷ জয়নাল কায়েত পড়া এলাকার ডন বজলুর সহযোগী।

স্থানীয় লোকজন জানান, গুলিবিদ্ধ তিনজনই জয়নালের সহযোগী৷ জয়নাল একটি হত্যা মামলায় গত বছরের জুনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে রেখে যাওয়া বাহিনীকে সংগঠিত করে প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষে জড়ান৷

চনপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মূলত মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার ইফতারের পর জয়নাল গ্রুপ এবং শমসে-শাহাবউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বুধবার ভোর পর্যন্ত দফায় তাদের মধ্যে সংঘর্ষ চলে৷ এই সময় উভয়পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনাও ঘটে৷

তবে জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (রূপগঞ্জ-আড়াইহাজার সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, ‘জয়নাল আবেদীন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছিলেন৷ সম্প্রতি সে জামিনে ছাড়া পায়৷ এতদিন এলাকায় আসেনি৷ এলাকায় আসার পরপরই তার বাহিনী নিয়ে শমসের ও শাহাবউদ্দিন গ্রুপের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে৷

উল্লখ্য, রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকাটি পরিচিত ‘চনপাড়া বস্তি’ নামে। বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা এই বস্তির জনসংখ্যা এক লাখের বেশি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর আরেকটি পরিচয় গড়ে উঠেছে। বলা হয়, মাদক কারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধীর ‘সদরদপ্তর’। খুন-রাহাজানি, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান-মলম পার্টিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত এখানকার অনেকেই। বস্তির অলিগলিতে ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকের কেনাবেচা হয় প্রকাশ্যে।