Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 3:11 pm

রেকর্ড ৩২৬০ কোটি টাকা লোকসান ন্যাশনাল ব্যাংকের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ন্যাশনাল ব্যাংক গত বছর রেকর্ড ৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এর আগে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো ব্যাংকের এক বছরে এত বেশি লোকসান দেওয়ার তথ্য জানাতে পারেননি ব্যাংক ও পুঁজিবাজার খাতের অনেকেই। লোকসান দেয়ার ফলে ২০২১ সালের মতো গত বছরের জন্যও শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

গত রোববার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ২০২২ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পর প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে ন্যাশনাল ব্যাংক শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ১০ টাকা ১৩ পয়সা। ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের ব্যাংকটির শেয়ার সংখ্যা ৩২১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭০টি। এ হিসাবে লোকসান হয়েছে ৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। ২০২১ সালে ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ৩৮ কোটি টাকা।

একসময় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনকারী এই বেসরকারি ব্যাংক ২০১৭ সালে নিট মুনাফা করেছিল ৪৬৯ কোটি টাকা। ২০১৮–১৯ সালেও ৪০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছিল ব্যাংকটি। ২০২০ সালে মুনাফা কমে হয় ৩৪৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালে যা একেবারে কমে হয় ৩৮ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০২০ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকের আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৪ কোটি টাকা ও ঋণ ছিল ৪০ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। ২০২১ সালে আমানত ও ঋণ বেড়ে হয় যথাক্রমে ৪৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ও ৪৪ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। তবে ২০২২ সালে আমানত ও ঋণ দুটিই কমে গেছে। ২০২২ সাল শেষে আমানত কমে হয়েছে ৪২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা ও ঋণ কমে হয়েছে ৪২ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

বিদায়ী বছরে, অর্থাৎ ২০২২ সাল শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হয়েছে ১০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এর ফলে খেলাপি ঋণের বিপরীতে বেশি পরিমাণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হচ্ছে, যা ব্যাংকটিকে লোকসানে যেতে বাধ্য করেছে।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ ও প্রতি প্রান্তিকে লোকসানের তথ্য প্রকাশ করায়’ অনেকে আতঙ্কিত হয়ে আমানত সরিয়ে নিয়েছেন। এর প্রভাবে দৈনন্দিন কাজ চালাতে ব্যাংকটিকে অন্য ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে টাকা ধার করতে হয়েছে। অন্যদিকে ঋণের টাকাও আদায় হচ্ছে না। এর ফলে খরচ বাড়িয়ে লোকসান হয়েছে।

গত বছর বড় অঙ্কের এ লোকসানের কারণ হিসেবে ব্যাংকটি সুদ মওকুফ, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি ও সুদ আয় কমে যাওয়াকে কারণ হিসাবে তুলে ধরেছে। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে এ কথা ব্যাংকটির পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।