প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং হাওরে পানি প্রবেশের কারণে হাওরাঞ্চলের মানুষজন সপ্তাহ যাবৎ বিদ্যুৎহীন হয়ে আছেন বলে জানা গেছে। তবে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, তাদের প্রায় চার লাখ গ্রাহক। এর মধ্যে যারা ভৌগোলিকভাবে দুর্গম এলাকায় আছেন, তাদের কিছু অংশ ছাড়া অন্যদের স্বাভাবিক পর্যায়ে বিদ্যুৎসেবা দেয়া হচ্ছে।
জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানাজার মিলন কুমার কুণ্ডু জানিয়েছেন, গত ২৭ ও ২৮ তারিখে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সুনামগঞ্জে প্রায় ৪০টি পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে একই সঙ্গে ৫০টির মতো লাইনে বিদ্যুৎ দেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও ট্রান্সফরমার জ্বলে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে সপ্তাহব্যাপী স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে লাইনের কাজ শেষে বিচ্ছিন্ন কিছু লাইন ছাড়া সব লাইনেই শুক্রবার থেকে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে।
অন্যদিকে এই সময়ে সবচেয়ে বেশি সময় বিদ্যুৎহীন রয়েছে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা তমাল সরকার জানিয়েছেন, ছয় দিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এ অবস্থায় আশেপাশের কোথায় কী সমস্যা হয়েছে এবং কবে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবেÑসেজন্য বিদুৎ অফিসে ফোন করেও সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি তারা গ্রাহকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে ভালো করে কথা বলতেই রাজি নয়। শুধু ‘দিব, দিচ্ছি’ বলে ফোন কেটে দেয়।
তাহিরপুর সাবজোনাল অফিসের এজিএম ইকরাম হোসেন জনি জানিয়েছেন, ‘প্রাকৃতিক কারণেই কয়েক দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমাদের লাইনগুলোয় সমস্যা দেখা দিয়েছে। ট্রান্সফরমার জ্বলে গেছে, কোথাও বিদ্যুৎ খুঁটি হেলে পড়েছে। তবে আজকের মধ্যেই সব অঞ্চলে বিদ্যুৎ চলে আসবে।
পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চললে বা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে তারা দ্রুততম সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে পারবে। বিষয়গুলো হলো, কোনো ছেঁড়া তার চোখে পড়লে কেউ স্পর্শ করবে না, তাৎক্ষণিকভাবে নিকটবর্তী অফিসে তথ্য দিতে হবে। বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছ বা গাছের ডালপালা বা অন্য কোনো বস্তু দৃষ্টিগোচর হলে অফিসে জানানো। ঝড়, বৃষ্টি বা বজ্রপাত বা যে কোনো সময় বৈদ্যুতিক খুঁটি বা টানা তারে হাত না দেয়া। মিটারের কভারের তার টিনের চালে লেগে কেটে গিয়ে থাকলে নিজে হাত না দিয়ে অফিসকে জানানো। কোনো কভার তারে কাপড় শুকাতে না দেয়া। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেকোনো কাজে বিদ্যুৎকর্মীরা সহযোগিতা চাইলে স্বেচ্ছাসেবক হয়ে সহযোগিতা করা।