রোজ খানিকটা হাঁটার উপকারিতা

রোজ খানিকটা হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত হাঁটলে অনেক সুফল পাওয়া যায়। দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম না হওয়ায় বা কভিডকালে কম হওয়ার কারণে এখন শরীরে বাসা বাঁধছে নানা অসুখ। এর মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থ্রাইটিস (বাত), ওবেসিটি বা স্থূলতা, মাংসপেশির শক্তি কমে যাওয়া ও অস্টিওপোরোসিস অন্যতম। অথচ শুধু হাঁটার মাধ্যমে এর অনেকগুলো আপনি রুখে দিতে পারেন।

কখন হাঁটতে হবে: সকালে না, বিকালে হাঁটলে ভালো। কতখানি হাঁটবেন, তা আপনার চিকিৎসক আপনার শরীর বা রোগের পরিধি বুঝে পরিমাণ নির্ধারণ করে দেবেন। তবে সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটতে হবে।

যেসব রোগের ঝুঁকি কমায়: ক. শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে। ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে, মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমে; খ. ওজন কমে। ওজন কমার যেসব সুবিধা, সেগুলো পাওয়া যায়। হাঁটুব্যথা, কোমরব্যথা কমে; গ. স্তন ক্যানসারসহ অন্য অনেক ক্যানসারের ঝুঁকি কমে; ঘ. হাঁটলে শরীরের পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে; ঙ. উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের (স্ট্রোক) ঝুঁকি কমাতেও প্রতিদিন হাঁটুন। করোনারি ধমনিতে ব্লক থাকলেও নিয়মিত হাঁটার কারণে আশপাশের ছোট রক্তনালিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে, ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে; চ. মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে। হাঁটার সময় হৃৎস্পন্দন আর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়ে। ফলে হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বাড়ে; ছ. যাঁরা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগ) কম হয়। হাড়ের জোড়া বা গিঁট সুস্থ থাকে।

সর্বোচ্চ উপকার পেতে: ১. হাঁটার উপকার পেতে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ও কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটুন; ২. বাসায় কিংবা অফিসে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারেন; ৩. হাঁটা শুরু করার প্রথম দিকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হাত-পা নেড়ে ওয়ার্মআপ করে নিন পাঁচ মিনিট; ৪. প্রথমে ধীরে হাঁটা শুরু করুন, তারপর গতি বাড়ান। শেষ পাঁচ মিনিট আবার গতি ধীর করুন। একে কুলডাউন বলে। তারপর এক জায়গায় বসে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফিরে আসুন।

এম ইয়াছিন আলী

ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ

চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল