রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার পথ করতে গাম্বিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে নিতে গাম্বিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু টাঙ্গারা। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিমপ্রধান এ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ মন্তব্য করেন। সূত্র: বিডিনিউজ
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়টা মানবিক। গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়টি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে নিতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেইসঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। তাদের কথায় পাওয়া যায় নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, রাখাইনে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, আর যেভাবে তা ঘটানো হয়েছে মাত্রা, ধরন ও বিস্তৃতির দিক দিয়ে তা গণহত্যার অভিপ্রায়কে অন্য কিছু হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টার সমতুল্য।
গতবছর ১৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে বিচারের মুখোমুখি করার কথা বলা হয়। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলামদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও গতবছর প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল একটি আন্তর্জাতিক প্যানেল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাদের কাজ হবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি করতে মামলার নথি প্রস্তুত করা।

প্রেস সচিব বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের, বিশেষ করে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেছেন গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের একটি চিঠি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন টাঙ্গারা। তার এই সফরে দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ফরেন অফিস প্রটোকল সই হয়। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার দীর্ঘ সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আট শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া এবং দারিদ্র্যের হার কমে ২১ শতাংশে নেমে আসার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া শিল্পায়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথাও তিনি তুলে ধরেন। অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।