রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কোন পথে?

তৌহিদুর রহমান: কয়েক দিন ধরেই একটি খবর দেশের গণমাধ্যমগুলোয় বেশ ফলাও করে প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে যে তথ্য উঠে আসছে তা বেশ উদ্বেগজনক। প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নেওয়া কিংবা অবৈধভাবে অবস্থান করা শত শত রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। ভারতে এমনিতেই মাত্র কয়েক হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। তারাও যদি বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাহলে তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে, সন্দেহ নেই। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তাদের আগমন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এখন এ ব্যাপারটি ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা হলো ভারতের মতো দেশ থেকে রোহিঙ্গারা কেন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে? আর দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কেন হচ্ছে না? আমরা কি রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে যাচ্ছি?
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর পরিকল্পিতভাবে চালানো মাত্রাহীন নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ থেকে বাঁচতে পালিয়ে গেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। এর মধ্যে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে দেশের তিন পার্বত্য জেলায়। বিশেষ করে কক্সবাজারের কয়েকটি আশ্রয়শিবিরে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে। হাজার হাজার একর প্রাকৃতিক বনভূমি ও পাহাড় পরিষ্কার করে তাদের জন্য এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আসা যে বন্ধ হয়ে গেছে, তা কিন্তু নয়। এখনও মাঝেমধ্যেই জানা যাচ্ছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছে। আর সম্প্রতি ভারত থেকেও রোহিঙ্গাদের আসা শুরু হয়েছে। সে হিসেবে আপাতত রোহিঙ্গাদের আগমন বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ২০১৭ সালের আগস্টে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়েই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। অবশ্য তারও আগে থেকেই কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের বেশ কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। দ্রুত রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান না হলে এ ক্ষতির আকার ক্রমেই বাড়বে। লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ পাহাড়ি বনভূমি ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনও সেখানকার গাছপালা সাবাড় অব্যাহত রয়েছে। কারণ রোহিঙ্গারা নিজেদের রান্নার জ্বালানির ব্যবস্থা করতে ও বসতবাড়ির কাজে প্রতিনিয়ত গাছ কেটে ফেলছে। গত বছর একটি পত্রিকায় খবরে জানানো হয়েছিল প্রতিদিন পুড়ছে অন্তত পাঁচ কোটি টাকার সমমূল্যের প্রায় সাত লাখ কেজি কাঠ। এতে সেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। এই বনাঞ্চল আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে বড় সংশয় রয়েছে। অবশ্য সম্প্রতি গ্যাস সিলিন্ডারসহ বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার সেখানে বাড়ছে। হাতিসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর আবাসস্থলও গভীর সংকটে পড়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়ার পথে থাকা এসব প্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা করা না গেলে সেগুলো হারিয়ে যাবে অচিরেই।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে তিন পার্বত্য জেলার সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে স্থানীয়দের জীবনযাত্রাও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। খোদ রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায়ই মারামারি ও অস্ত্রবাজির খবর পাওয়া যাচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য চোরাচালানে রোহিঙ্গাদের সখ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাদের কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাংলাদেশিদের কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অনেকে নানা ধরনের কাজে ভাগ বসানোয় স্থানীয়দের কর্মসংস্থানে টান পড়েছে। এছাড়া নারীঘটিত নানা ধরনের অপরাধের খবরও গণমাধ্যমে এসেছে। রোহিঙ্গা নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণেও আগ্রহী নয়। ফলে ক্যাম্পগুলোতে জন্ম নেওয়া হাজার হাজার শিশু বাড়তি চাপ তৈরি করছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
রোহিঙ্গাদের কারণে এখন আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় হুমকি তৈরি হয়েছে, তা বললে সম্ভবত ভুল হবে না। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আইশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এদেশে প্রবেশ করছে, স্থানীয়দের সঙ্গে মিশেও যাচ্ছে অনেকে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো জালিয়াতি করে বা অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট করে দুই লাখের বেশি রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছে। এ তথ্য কিন্তু সরকারিভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী হওয়ায় কোনো দেশে অপরাধে জড়িয়ে পড়লে দায় বর্তাবে আমাদের ওপরই। এতে দেশের ভাবমূর্তি যেমন নষ্ট হবে, তেমনি কূটনৈতিক বিনিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে। সম্প্রতি এর কিছু নমুনাও সামনে এসেছে। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ১৩ রোহিঙ্গাকে গত ৮ জানুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব। এমন আরও অন্তত ২৫০ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে। তাদের অধিকাংশই সৌদি আরবের ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিল।
এভাবে রোহিঙ্গা সংকট ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে হতাশা ও উদ্বেগ ক্রমে বাড়ছে। কিন্তু এ সংকটের সমাধান প্রক্রিয়ার অগ্রগতি আসলে কতটা হয়েছে? সার্বিক পরিস্থিতি দেখে যেটা দৃশ্যমান হচ্ছে, তা হলো রোহিঙ্গা ইস্যুটি ক্রমেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অতীত ঘটনার মতো হয়ে যাচ্ছে। তাদের দৃশ্যপট থেকে রোহিঙ্গা ইস্যু সরে গিয়ে বৈশ্বিক অন্য অনেক বিষয় স্থান করে নিচ্ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার কারণ হবে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের এদেশে আসার প্রবণতা বাড়তি চাপ তৈরি করছে।
২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গা সংকট শুরু হয়, তখন বিশ্বের জনমত ছিল মিয়ানমারের বিপক্ষে। দেশটির কথিত গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সাং সুচির সমালোচনাও হচ্ছিল ব্যাপকভাবে। অপরদিকে বাংলাদেশের মানবিক উদ্যোগের জন্য প্রশংসাও হয়েছে বিশ্বজুড়ে। সে সময়কার পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান হবে বলেই আশা করা হচ্ছিল, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং এ সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং হি লি’ও এ শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি, এমন অভিযোগ এখন তোলাই যায়। এছাড়া আমাদের কিছু কর্মকাণ্ডে কিংবা কূটনৈতিক তৎপরতায় ঘাটতি রয়েছে কি না সে বিষয়টিও পর্যালোচনা করে দেখা দরকার।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে সিংহভাগই মুসলিম। সে হিসেবে তাদের অধিকার রক্ষায় মুসলিম দেশগুলোর জোট অরগানাইজেশন অব মুসলিম কো-অপারেশনের (ওআইসি) সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার কথা ছিল। কিন্তু সংস্থাটি সে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেÑকিছু বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েই দায় সেরেছে। এ অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসির আরও কার্যকর ভূমিকা কাম্য। মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে আমাদের সে অধিকার আদায় করে নিতে হবে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বৈশ্বিক জোটগুলোর ভূমিকাও তেমন সন্তোষজনক নয়। আগে কোথাও এ ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এ সংস্থাগুলো। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের অবস্থান হতাশাজনক।
জাতিসংঘ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বেশ সোচ্চার শুরু থেকেই। তবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের চেয়ে মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার দিকেই বৈশ্বিক সংস্থাটির মনোযোগ বেশি বলে মনে হয়। অবশ্য জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বেশ কিছু প্রস্তাব ও উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তবে চীন, রাশিয়া ও ভারতের মতো কয়েকটি পরাশক্তির অসহযোগিতায় তা আলোর মুখ দেখেনি। দায়িত্বশীল এ দেশগুলো থেকে এ ধরনের অবস্থান কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ তিন দেশই কিন্তু অনেক আগে থেকেই আমাদের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তারপরও তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়াটা দুঃখজনক।
গত প্রায় দেড় বছরের ঘটনাপ্রবাহে একটি বিষয় পরিষ্কারÑমিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তেমন আন্তরিক নয়। এমনকি প্রত্যাবাসন চুক্তি হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। আর তাদের প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে চীন, ভারত ও রাশিয়া। অবশ্য এ দেশগুলো বিশেষ করে চীন ও ভারতের বড় স্বার্থ রয়েছে মিয়ানমারে। সেখানে শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে দেশ দুটির। পাশাপাশি আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠায়ও মিয়ানমার গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য কোনো দেশই মিয়ানমারের বিরাগভাজন হতে চায় না। সে হিসেবে রোহিঙ্গা সমস্যার কার্যকর সমাধান পেতে হলে এ তিন দেশের সমর্থন আদায়ের বিকল্প আপাতত নেই বলেই মনে হয়।
ভারত আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুরাষ্ট্র। রাশিয়া ও চীনের সাথেও আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। এজন্য রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা জরুরি। এছাড়া কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তা তাদের জানাতে হবে। সম্প্রতি ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের এদেশে আসার প্রবণতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। এর কারণ উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনে ভারতে কূটনৈতিক মিশন পাঠিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
এ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে দীর্ঘদিন আশ্রয় দিয়ে রাখা আমাদের মতো দরিদ্র দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। বিপুল পরিমাণ অর্থ তাদের জন্য ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক নিরাপত্তাসহ অন্যান্য দিক বিবেচনা করলে আর্থিক ক্ষতি আরও বিশাল। সে হিসেবে যতদিন এ সমস্যার সমাধান না হবে, ততদিন এসব রোহিঙ্গাদেরকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাগ করে পাঠানো যেতে পারে। রোহিঙ্গারাও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। ভাসানচরে তাদের পাঠানোর যে প্রক্রিয়া তাও সহসাই আলোর মুখ দেখছে না। এ নিয়ে নানা ধরনের মত রয়েছে। তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়ে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত কাম্য। এক্ষেত্রে অবশ্য ইন্দোনেশিয়া কিংবা মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। তাদের কয়েকটি দ্বীপে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কিংবা সরাসরি কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে এ দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যেতে পারে। এতে আমাদের ওপর চাপ কমার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পথও সুগম হবে বলেই বিশ্বাস।
রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ এবং এ ইস্যুর সমাধানে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য জরুরি। তবে হতাশাজনক ব্যাপার হলো অতীতে দারুণ ঐক্য থাকলেও এখন অনৈক্যই বেশি প্রকট। ইরান, সৌদি আরব কিংবা তুরস্ককেন্দ্রিক ব্লকে বিভক্ত দেশগুলো। ফলস্বরূপ বিশ্বজুড়েই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মুসলিমরা। মধ্যপ্রাচ্য, মিয়ানমার ও চীন থেকে শুরু করে সব দেশে মুসলিমদের রক্ষা করতে হলে অনৈক্য দূর করে একই ছাতার নিচে আসা গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে আরও ভুগতে হতে পারে মুসলমানদের।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকারও তেমন আন্তরিক নয়। নানা অজুহাতে এ সংকট দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তবে গত কয়েক মাসে দেশটির আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। অবশ্য এ গোষ্ঠীগুলো চীন থেকে অস্ত্র পায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমারকে বাগে রাখতে চায় বলে অভিমত অনেক বিশ্লেষকের। এতে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই চীনকে সবার আগে রাজি করানোর কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমারকে বাধ্য করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের মনে রাখা দরকার, রোহিঙ্গা সংকট যত দীর্ঘায়িত হবে আমাদের তত বেশি সমস্যার মুখে পড়তে হবে।

গণমাধ্যমকর্মী
touhiddu.rahman1@gmail.com