নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ায় সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে ঢাকার ১৪টি দূতাবাস ও হাইকমিশন। রোহিঙ্গা সংকটের ৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) যৌথ বিবৃতিতে এই অঙ্গীকার করে দেশগুলো।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা ২০১৭ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের ভয়ঙ্কর ঘটনা স্মরণ করি। ৫ বছর আগে যে ঘটনাটি প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছিল। আমরা বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের উদারতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অব্যাহত আশ্রয় দেয়ার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছি। পরিস্থিতি অনুক‚ল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসন ও এই সংকটের সমাধান চাই। আমরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন উদ্বেগের সঙ্গে নোট করছি। আমরা মিয়ানমারে দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসানের আহ্বানন জানাই। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক জবাবদিহিমূলক উদ্যোগের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারে রাজনৈতিক ও মানবিক সংকট সমাধানেও চাপ আমরা অব্যাহত রাখব, যেন এই সমাধানে অবশ্যই রোহিঙ্গাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা, সুরক্ষা এবং শিক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অংশীদারদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।
৫ বছর পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের জন্য তাদের সমর্থনে সংহতিতে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই সংকট এবং এর কারণগুলোর দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাব।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলো হচ্ছে : অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন, ব্রিটিশ হাইকমিশন, কানাডার হাইকমিশন, ডেনমার্কের দূতাবাস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল, ফ্রান্সের দূতাবাস, জার্মানির দূতাবাস, ইতালির দূতাবাস, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, নরওয়ের দূতাবাস, স্পেনের দূতাবাস, সুইডেনের দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা নাগরিকরা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শুরু করে। ৫ বছরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।