নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান ও লেনদেন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে। এতে টানা তিন সপ্তাহ ধরে সূচকের উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। গত সপ্তাহে সূচকের সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এ সময়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। সুবিধাবাদী বিনিয়োগকারীরা খাতভিত্তিক নির্দিষ্ট শেয়ারে তাদের কেনার চাপ অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় বিমা খাতের শেয়ারগুলোতে আগ্রহ বেশি ছিল। ফলে সূচক ও লেনদেনে উত্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তবে বাজারে কেনার আধিপত্য থাকার পরও সতর্ক বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রবণতার ওপর তাদের নড়বড়ে আত্মবিশ্বাসের কারণে স্বল্প সময়ের মুনাফা সংগ্রহে আগ্রহী ছিল। ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসগুলোয় বিক্রির চাপে সূচকের পতন দেখা গেছে বলে জানান তারা।
আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন বৃদ্ধিতে বিমা খাতে শেয়ার কেনার চাপ ও আগ্রহ বেশি ছিল বিনিয়োগকারীদের। ফলে খাতটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে। এদিকে বিক্রির চাপ থাকায় সপ্তাহটিতে দর কমার শীর্ষে রয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ার।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে বাজারে লেনদেন হয়েছে মোট ৩৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এর মধ্যে টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮২টির, তার বিপরীতে কমেছে ৭৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২৩টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ৯০টির, কমেছিল ৬৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৩ পয়েন্ট ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪ পয়েন্ট কমেছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৬২২ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ২২৮ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৩৯৪ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন বেড়েছে, শতাংশের হিসাবে যা ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সূচক টানা তিন সপ্তাহ উত্থান ধরে রেখেছে, কারণ সুবিধাবাদী বিনিয়োগকারীরা খাতভিত্তিক নির্দিষ্ট শেয়ারে তাদের কেনার চাপ অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় বিমা খাতের শেয়ারগুলোতে বেশি চাপ ছিল। তাই আলোচ্য খাতের শেয়ারগুলো গত সপ্তাহে গতি ফিরে পেয়েছে। সপ্তাহটিতে বাজারে ক্রমাগত ক্রেতাদের আধিপত্য থাকলেও সতর্ক বিনিয়োগকারীরা বাজারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নড়বড়ে আত্মবিশ্বাসের কারণে তাদের স্বল্প সময়ের মুনাফা সংগ্রহে আগ্রহী ছিল। ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসগুলোতে বিক্রির চাপে পতন হয়েছে। অপরদিকে জুন শেষে কোম্পানিগুলোর আয় ঘোষণার মৌসুমে দ্রুত লাভের সুযোগ কাজে লাগাতে সুবিধাবাদী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে উত্থান হয়েছে বলে জানান তারা।
এদিকে গত সপ্তাহে কেনার চাপ সবচেয়ে বেশি থাকা বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড খাত। তৃতীয় স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ
এদিকে গত সপ্তাহে বিক্রির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। দুই শতাংশ শেয়ারদর কমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল আইটি খাত। তৃতীয় স্থানে থাকা পাট খাতের শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাক খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৯ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৬৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এসময় লেনদেন হয়েছে ৫৬৭ কোটি ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৩২ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৭টির, কমেছে ৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।