ঘাটতি ২৮ কোটি টাকা

লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে না পিএফআই সিকিউরিটিজের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গ্রাহক হিসাবে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ২৮ কোটি টাকার বেশি হওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজ পিএফআই সিকিউরিটিজের লাইসেন্স নবায়ন করছে না ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

ঘাটতি থাকার পরও ব্রোকারেজ লাইসেন্সে নবায়ন করার আবেদন করেছিল পিএফআই সিকিউরিটিজ। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ তা নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে।

লাইসেন্স নবায়ন না হওয়ায় সোমবার থেকেই পুঁজিবাজারে কোনো ধরনের শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছে না ব্রোকারেজ হাউজটি। ব্রোকারেজের মত স্টক ডিলারের লাইসেন্স নবায়ন না করায় কোনো ধরনের লেনদেনও তারা করতে পারবে না।

ডিএসইর চিঠিতে বলা হয়, গত অগাস্ট পর্যন্ত পিএফআই সিকিউরিটিজে ‘কনসোলিডেটেড কাস্টমারস অ্যাকাউন্টে’ (সিসিএ), অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের অর্থ যে হিসাবে জমা রাখা হয়, সেখানে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় থাকা ব্যক্তিরা বিনিয়োগকারীদের ওই অর্থ সরিয়ে নিয়েছেন। ঘাটতি অর্থ পূরণে একাধিকবার সময় দিয়ে সতর্কও করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সিকিউরিটিজ নীতিমালা অনুযায়ী, স্টক ব্রোকার ও স্টক ডিলার হিসাবে সার্বক্ষণিক নিট মূলধন থাকতে হয় কমপক্ষে এক লাখ টাকা। সেখানে ঘাটতি রয়েছে পিএফআই সিকিউরিটিজের।

এর আগে গ্রাহক হিসাব থেকে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় পিএফআই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী ও পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

গত ১১ সেপ্টেম্বর দেওয়া একই আদেশে তাদের মালিকানাধীন বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে খোলা গ্রাহকের হিসাসের নাম) হিসাব ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়।

দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারধারক হওয়ায় বছর শেষে যে লভ্যাংশ পায়, তার উপরও স্থগিতাদেশ দেয় বিএসইসি। ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন সনদ নবায়ন, শাখা বা বুথ খোলার অনুমোদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগেও পিএফআই সিকিউরিটিজের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধ জাল-জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। ২০২২ সালে ফারইস্ট ফাইন্যান্স থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে পিএফআই সিকিউরিটিজে ১০ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।

এর মধ্যে ৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিকল্প পরিচালক এম এ খালেক, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফরিদউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত এমডি ও কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মুসফিকুর রহমানকে আসামি করে মামলা করে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফরিদউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

পিএফআই সিকিউরিটিজের ১২ পরিচালকের বাকিরা হলেন তারেক একরামুল হক, নাসিম ইকবাল, শাহরিয়ার খালেদ, কে এম রকিব হাসান, কাজী সালমান সারওয়ার, মোস্তাফিজুর রহমান, মনজুর আহমেদ, মোহাম্মদ জাভেদ লিয়াকত, মোহাম্মদ ফারুক, মোহাম্মদ ইয়ামিন কবির ও মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান।

একই অভিযোগে এর আগে ১৩ নভেম্বর সাবভ্যালি সিকিউরিটিজের ব্রোকার ও স্টক ডিলার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ডিএসই।