Print Date & Time : 27 July 2025 Sunday 2:43 pm

লাদাখে সংঘাত এড়াতে ৫ দফা পরিকল্পনায় সম্মত চীন ও ভারত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: লাদাখ সীমান্তে গত কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনা নিরসনে পাঁচটি পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে চীন ও ভারত। রাশিয়ার মস্কোয় চলতে থাকা সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ সম্মতিতে পৌঁছান। গতকাল শুক্রবার ভোরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই মন্ত্রীর ‘খোলামেলা এবং গঠনমূলক’ আলোচনায় পাঁচটি পরিকল্পনায় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। খবর: এনডিটিভি।

গত মে মাস থেকে লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী। জুন মাসে একবার প্রাণঘাতী সংঘাতের পর সম্প্রতি দুই দেশই ৪৫ বছর পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে। প্রথম দফা সহিংসতার পর রাশিয়ার হস্তক্ষেপেই প্রতিবেশী দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনে কথা বলেন। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি ভালো হওয়ার চেয়ে আরও জটিল হয়ে যায়। পরে এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে বৈঠকের উদ্যোগ নেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

বৃহস্পতিবার ওই বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাঁচটি বিষয়ে একমত হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সীমান্তের সম্মুখসারির সেনা ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সব চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং পরিস্থিতি উত্তেজক করে তুলতে পারে এমন সব কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন যে, সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি কোনো পক্ষের স্বার্থের অনুকূল নয়। সে কারণে তারা একমত হয়েছেন যে, উভয় পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর উচিত তাদের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া, দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া, যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখা এবং উত্তেজনা নিরসন করা।’

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই একমত হয়েছেন, উভয় পক্ষেরই উচিত হবে ভারত-চীন সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে যেসব ধারাবাহিক সম্মতি তৈরি হয়েছিল তার থেকে নির্দেশনা নেওয়া। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যকার বৈঠকের দিকে ইঙ্গিত করে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই মন্ত্রী একমত হয়েছেন, উভয় পক্ষের উচিত চীন-ভারত সীমান্তবিষয়ক বিদ্যমান সব চুক্তি এবং প্রোটোকল মেনে চলা, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং উত্তেজনা বাড়াতে এমন যে কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা।’

মস্কোর আলোচনায় জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই একমত হয়েছেন, সীমান্তের উত্তেজনা প্রশমনে উভয় দেশেরই নতুন আত্মবিশ্বাস গঠনমূলক কাজ ত্বরান্বিত করা উচিত। যাতে করে সীমান্তের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং তা জোরালো হয়।

এছাড়া ওই বৈঠকে উভয় দেশই চীন-ভারত সীমান্ত প্রশ্নে বিশেষ দূত মারফত আলোচনা ও যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও একমত হয়েছে।