Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 11:35 pm

শনিবার থেকে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী শনিবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে ট্রেন। তবে এবার ট্রেনের সংখ্যা কমবে না। বর্তমানে যত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে, এর সবই চলবে। গতকাল রেলভবনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

অর্ধেক আসন ফাঁকা গেলেও ভাড়া বাড়ানো হবে না বলে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। ট্রেন ও স্টেশনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেয়া হবে না। ট্রেনে খাবার পরিবেশন এবং রাতে ঘুমানোর জন্য বিছানা দেয়ার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, ট্রেনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক আসনের টিকিট অনলাইন ও কাউন্টার দুই জায়গায় সমানভাবে বিক্রি করা হবে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে (অ্যাপ/অনলাইন), আর বাকি ৫০ শতাংশ টিকিট স্টেশনের কাউন্টারে পাওয়া যাবে।

২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ওই বছর জুলাই থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চালানো হয়। তখন অল্প কিছু আন্তঃনগর ট্রেন চালু রাখা হয়েছিল। এজন্য ট্রেনগুলোয় যাত্রীর চাপ বেড়ে গিয়েছিল। তাই এ দফায় ট্রেন না কমিয়ে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

বর্তমানে রেলওয়ের যাত্রীবাহী ট্রেন রয়েছে ৩৫৫টি। এর মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ১০৮টি। বাকিগুলো মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন। তবে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইঞ্জিন ও কোচ সংকটের কারণে কিছু মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ রয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে মোট ১১টি নির্দেশনা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয় বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্তারিত জানাবে। তার পরদিন রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ঘোষণা এলো।

তবে অনলাইনে বিক্রি হওয়া অগ্রিম টিকিটের কী হবে, সে বিষয়ে কিছু জানেন না রেলমন্ত্রী। আগেই টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল কীভাবে করবে, সে বিষয়েও তিনি নিশ্চিত নন।

গতকাল রেল মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পাঁচ দিন আগেরও টিকিট বিক্রি হয়। তাই ১৩ জানুয়ারির টিকিট কতগুলো বিক্রি হয়েছে, তা জানতে হবে।’

টিকিট বেশি বিক্রি হলে ১৩ জানুয়ারি ট্রেন কীভাবে চলবেÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না যে, সরকারের বিধিনিষেধ মানব না। যেহেতু অনলাইনে টিকিট বিক্রি হয়েছে। তাই বিষয়টি জানতে হবে, আর স্বাস্থ্যবিধি তো অবশ্যই মানতে হবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতে আপনারা দেখেছেন, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ ট্রেন মেনে চলেছে। সব যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে ট্রেন করোনাভাইরাসের সময় অর্ধেক যাত্রী নিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেছে।’

সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে চট্টগ্রামে রেলওয়ে স্টেশন রোডে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভূমিতে শপিংমলসহ হোটেল ও গেস্ট হাউস নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেন রেলমন্ত্রী।

৪০ বছর মেয়াদি এ চুক্তিতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ দশমিক ২৫ কোটি টাকা, যার নির্মাণ শেষ হবে চার বছরের মধ্যে। এর আওতায় প্রায় ২৭ কাঠা জমির ওপর হোটেল, শপিংমল, সিনেমা হল, কনভেনশন সেন্টার ও অ্যাপার্টমেন্ট গড়ে তোলা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জমির মালিকানা রেলওয়ের থাকবে ও ৪০ বছর পর ওই স্থাপনা রেলওয়ের শতভাগ মালিকানায় পরিচালিত হবে। রেলমন্ত্রী বলেন, সরকার রেল খাতকে লাভজনক করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটি পিপিপির অধীনে রেলে দ্বিতীয় চুক্তি।