প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: ভোটের আগে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে মাঠে নামার ঘোষণা দিলেও তিনি নামেননি। এতে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন হয়েছে, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।’ গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগে মর্গান বালিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে সিটি নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন সিইসি।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী, যিনি ১০ বছর ধরে ওই দায়িত্ব সামলে আসছেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন তৈমূর আলম খন্দকার।
বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। সেজন্য তাকে দলীয় পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে ভোটের কার্যক্রম শুরু হলে বরাবরই আলোচনায় থাকেন প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্য শামীম ওসমান। গত ১০ জানুয়ারি তিনি সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় প্রতীক ‘নৌকার পক্ষে নামার’ ঘোষণা দেন। তার ওই ঘোষণা নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আইভীও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, একজন সংসদ সদস্য হয়ে শামীম ‘মাঠে নামলে’ তাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে।
শামীম ওসমানের সংবাদ সম্মেলনে ‘আচরণবিধি ভঙ্গ’ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, সংসদ সদস্যরা প্রচারে অংশ নিতে পারবে না। প্রচারে নামলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। শামীম ওসমানের সংবাদ সম্মেলনটি আচরণবিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে। তবে তাকে নোটিস বা শাস্তির আওতায় আনতে হবে, এমন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি।
সিইসি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ভোটের পরিবেশে নিয়ে তিনি শঙ্কার কিছু দেখছেন না। আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের মানুষ ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই’ ভোট দিতে পারবে বলে তার বিশ্বাস।
গত ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, গত নির্বাচনে লোক মারা গেছেÑসেটা কীভাবে, আমি সেটা আপনাদের বলার চেষ্টা করেছি। কীভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর সেই দায়বদ্ধতা আসে, সেটা আমার হিসাবে মেলে না। নির্বাচন হয়ে গেলে ভোটাররা যখন বাড়ি চলে যায়, নির্বাচনী মালামাল নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়ার পথে শত শত লোক এসে তাদেরকে ঘেরাও করে। তাদের আক্রমণ করে ব্যালট বাক্স নিয়ে যায়Ñএ জাতীয় ঘটনা ঘটে।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইভিএমের জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনেক তিরস্কার সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমরা তখন বিশ্বাস করেছি, এটাই একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব। তাই আমরা কারও তিরস্কারে কর্ণপাত করিনি। ইভিএম নিয়ে আমাদের যাত্রা অব্যাহত রেখেছি। এটা ব্যবহারে ভুল হতেই পারে। সে ভুল থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করব। প্রথমে ইভিএম আরও জটিল ছিল, এখন এটা সহজ হয়েছে। আমরা ইভিএম এক্সপার্ট তৈরি করে ফেলেছি, আরও তৈরি করব।’