Print Date & Time : 7 August 2025 Thursday 12:38 pm

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলতে কাজ চলছে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মসূচি ঠিক করছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা জানান তিনি।

কভিড-১৯ মহামারির কারণে দেড় বছর ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এর আগে সচিব সভায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা প্রোগ্রাম ঠিক করছেÑকীভাবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব… তারা আপনাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বসবে। পাবলিকলি বলে দেবে।’

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছর ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির ফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেয়া হয়।

দেড় বছর ধরে ঘরে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও তাতে শিক্ষা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

প্রতি বছর ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালন এবং একই সঙ্গে দিবসটি পালনের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা এ-সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘ক’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এ প্রস্তাবটি এনেছে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তারা শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজ নিয়ে এসেছেন। সেখানে পাঁচ হাজারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে, তারা গত ১০-১২ বছর ধরে শেখ রাসেল দিবস পালন করছে ১৮ অক্টোবর। শিশু একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এটা পালন করছে। তারা বলেছেন, দেশের শিশুদের মধ্যে একটা বড় প্রভাব সৃষ্টি করার জন্য যদি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়, তাহলে ভালো হবে। ক্যাবিনেট সেটা এগ্রি করেছে।’

‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (বেতন ও সুবিধাদি) আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘২০১৩ সালে কোর্টের রায় ছিল, সামরিক শাসনের যে অধ্যাদেশগুলো, সেগুলো আইনে পরিণত করা, এটা একচুয়ালি সেটাই। এটাকে ইংরেজি থেকে বাংলায় নিয়ে আসা হয়েছে। সেজন্য এটা ক্যাবিনেট একেবারে পুরোটাই (চূড়ান্ত) অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে। এরপর পার্লামেন্টে যাবে।’

বৈঠকে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ভ্রমণ-ভাতা) আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটাও অধ্যাদেশ ছিল। এটাতেও নতুন কোনো বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, আগে যেটা ছিল সে অনুযায়ীই। এটাকেও পুরো অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শুধু ছোটখাটো অ্যামেনমেন্ড (সংশোধন) হয়েছে। যেমন আগে দৈনিক ভাতা ৫০০ বা সাড়ে ৫০০ টাকা ছিল, সেখানে এক হাজার ৪০০ টাকা করা হয়েছে।’

এছাড়া বার কাউন্সিল অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করতে একটি আইনের খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল (সংশোধন) আইন, ২০২১’ শীর্ষক এ খসড়া আইনের অনুমোদন প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কিছুদিন আগে বার কাউন্সিলের অধ্যাদেশ করা হয়েছিল, কারণ যদি কোনো কারণে টাইম ওভার হয়ে যায়, তখন কী করবে, সেটার কোনো বিধিবিধান ছিল না। সেজন্য বার কাউন্সিল অধ্যাদেশ হিসেবে এটি নিয়ে আসা হয়েছিল। অধ্যাদেশ করলে সংসদ শুরু হলে এক মাসের মধ্যে সেটাকে আইনে পরিণত করতে হয়, নইলে সেটা বাদ হয়ে যায়। সেজন্য তারা এটা নিয়ে এসেছে। সেটা ক্যাবিনেট রি-অনুমোদন করেছে।’