শিক্ষার্থীদের মেসগুলোয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

কভিডকালে দুঃসময় অতিক্রম করছে সবাই। বিশেষ করে আয় কমে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের। শিক্ষার্থীরাও এর বাইরে নয়। মহামারি কভিডের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের তড়িঘড়ি করেই ছাড়তে হয় হল ও মেস। প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পরে অন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো তা গড়িয়েছে অনির্দিষ্টকালে। হল ও মেস ত্যাগের সময় শিক্ষাসনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে পারেননি কেউ। সুযোগ কাজে লাগিয়েছে চোরের দল। রাবির আশেপাশের এলাকার মেসগুলোয় হানা দিয়েছে তারা। গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুর ও স্টেশনবাজারের কয়েকটি মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে স্টেশনবাজার এলাকার এক মেসের আটটি তালা ভেঙে সব মালপত্র চুরি হয়েছে। চোরেরা নিয়ে গিয়েছে শিক্ষার্থীদের সনদপত্রও।

গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘মেসে চুরির উপদ্রবে আতঙ্কে রাবি শিক্ষার্থীরা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে একজন শিক্ষার্থী চুরি হওয়া সনদপত্র ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলেমিটার দূরে সারদা উপজেলা থেকে উদ্ধার করতে পেরেছেন। তার রুমমেটের সনদ এখনও পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর রাবিতে আবাসন সুবিধা রয়েছে মাত্র আট হাজার জনের।  ফলে বাকি ২৭ হাজার শিক্ষার্থীদের আশেপাশের মেস কিংবা ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। এখন মেস ভাড়া সংকটের মধ্যে এখন চোরের উপদ্রব। এ কারণে আতঙ্কে দিন পার কারছেন রাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

এমনিতেই করোনার কারণে সংকটময় পরিস্থিতিতে ভাড়া পরিশোধ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে আছেন। এখন জিনিসপত্র ও শিক্ষাসনদ খোয়ানো তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। কারও তিন মাসের ভাড়া বাকি পড়েছে। অনেকে টিউশনি করে চলতেন। এখন সে আয় বন্ধ। সনদ হারিয়ে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

চুরি হয়তো পুরোপরি ঠেকানো যাবে না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মেসসহ বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় পুলিশি টহল বাড়াতে হবে। নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে মেসমালিককেও। ভাড়া না পেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এমনকি মালপত্র ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার মতো অমানবিক কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মেসমালিকরা। আয়ের একমাত্র উৎস হলেও এমন গর্হিত কাজ তারা করতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিরসনে এগিয়ে আসতে পারে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সনদপত্র তুলতে তাদের সহযোগিতা করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মেসের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মেসমালিক, জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো।