প্রতিনিধি, বাগেরহাট : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, শিগগিরই বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে পে-পাল চালু করা হবে। ফ্রিল্যান্সারদের প্রাণের দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এটা চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
গতকাল শুক্রবার বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাগেরহাট গড়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী তা করবেন। বাগেরহাটের শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জেলা সদরে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায়ও তথ্যপ্রযুক্তি ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ সেন্টার করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বের হবেন, যারা নিজেরা আয় করার পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের যে ভিশন রয়েছে, তার চারটি স্তম্ভ শক্তিশালীভাবে তৈরি করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চারটি স্তম্ভের মধ্যে আছে সাধারণ মানুষদের স্মার্ট নাগরিক করে গড়ে তোলা, যারা হবে বুদ্ধিদীপ্ত, উদ্ভাবনী, সমস্যার সমাধানকারী এবং স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ বিকাশ, নগদ, রকেট এসব ক্যাশলেস ট্রানজেকশন।
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে ক্যাশলেস স্মার্ট ইকোনমি গড়ে তুলবেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের সকল সরকার ব্যবস্থা হবে স্মার্ট। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের কাছে কাউকে ফিজিক্যালি (সশরীর) যেতে হবে না, সবকিছু ভার্চুয়ালি হবে। কভিডকালে আমরা সবকিছু ভার্চুয়ালি করলাম। দেশের ১৫ কোটি মানুষ সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করেছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সে সময়ে মানুষের টাকা ও সময় দুটোই বেঁচে গেছে। এরই মধ্যে দুই হাজার সেবাকে ডিজিটাইজড করেছি, আরও তিন হাজার সেবাকে ডিজিটাইজড করা হবে, যা হবে সম্পূর্ণ পেপারলেস (কাগজবিহীন)। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে একটি আধুনিক প্রযুক্তি থাকলে তা দেশ-বিদেশের যেকোনো জায়গায় বসে করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সরকারের সব সেবাকে আরও কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ ধনী-দরিদ্র সকল শ্রেণিপেশার মানুষ তথ্যপ্রযুক্তির সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, সেই প্রত্যাশা এই সরকারের। এছাড়া দেশের ৬৪টি জেলায় একটি করে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মার্ট মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাগেরহাট-২ (কচুয়া-সদর) আসনের সংসদ সদস্য শেখ তš§য় বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন, পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল ইসলাম ও ব্র্যাক-কুমনের প্রধান নেহাল বিন হাসান।
আইসিটি ডিভিশন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, এটুআই, আইডিয়া ও ইডিজিই আয়োজিত দিনব্যাপী মেলায় ৩৫টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল দিয়েছে।
মেলা উপলক্ষে আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে ২০ ফ্রিল্যান্সারকে ২০টি ল্যাপটপ এবং ৪০ উদ্যোক্তাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।