নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিগগির সরকারবিরোধী আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা নিয়ে জনগণের সামনে আসব। যৌথ ঘোষণার ভিত্তিই হবে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
গতকাল রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলছি, গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আমাদের কোনো ছন্দপতন নেই। এখানে কৌশলগতভাবে এবং বাস্তবতার দিক থেকে বিএনপির কর্মসূচিগুলো সারাদেশে এবং অনেক সময় ধরে হয়। আমাদের কিছু কর্মসূচি থাকে, যেগুলো আমরা যুগপৎভাবে করার চেষ্টা করি। আবার অনেক কর্মসূচি থাকবে, যেগুলো প্রত্যেক দল তাদের মতো করে করতে পারে। গণতন্ত্র মঞ্চ সেটা করতে পারে। অর্থাৎ মূল যে দাবি, এ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং রাষ্ট্রের যে সংস্কারের কথাগুলো রয়েছে, সেগুলোয় আমরা একমত হয়েছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে দমন করার জন্য গত ১৪ বছর ধরে একই কায়দায় সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করছে, হত্যা-নির্যাতন করছে, গ্রেপ্তার করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের যে স্বাধীনতা এটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করার বিষয়ে একমত হয়েছি বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, এ আইনের কারণে কয়েকজন সম্পাদক এরই মধ্যে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, চলমান আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া চলমান আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা যায় এবং আন্দোলন কীভাবে সামনে এগিয়ে নেয়া যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। আশা করি, যুগপৎ আন্দোলনের যে কর্মসূচি, সেটা আরও বেগবান হবে। অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বাড়াতে পারব। আন্দোলনকে আরও বেগবান করে এ ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকারকে প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ ব্যাপারে আমরা সবাই নিশ্চিত একমতÑএ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না। দেশের জনগণও কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।
বৈঠক প্রসঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের যৌথ ঘোষণার ব্যাপারে একমত হয়েছি। বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির একজন সদস্য অসুস্থ আছেন, তাদের কিছু সাংগঠনিক কাজও আছে, সেগুলো শেষ হলে আশা করি দ্রুত ও যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা দিতে পারব। আশা করি, স্বল্প সময়ের মধ্যে সেটা করতে পারব।
বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও গণ-অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ।