Print Date & Time : 13 September 2025 Saturday 4:36 am

শিশুর অতিরিক্ত প্রস্রাব

শিশুর প্রস্রাবের সমস্যা নিয়ে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। এ উৎকণ্ঠা অমূলকও নয়। শিশুর কখনও প্রস্রাব বেশি হয়, কখনও কম, অনেক সময় শিশুর প্রস্রাব করতে কষ্ট হয়। এমন হলে তা অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।

কখন বলব এটা সমস্যা: অতিরিক্ত প্রস্রাব বলতে সাধারণত শিশুর ঘনঘন প্রস্রাব হওয়াকে বোঝায়। তবে পরিমাণে বেশি প্রস্রাব হওয়াকেও শিশুর অতিরিক্ত প্রস্রাব বলা হয়ে থাকে। একই সঙ্গে দুটি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, ২৪ ঘণ্টায় শিশু তার প্রতি কেজি ওজনের অনুপাতে ১০০ মিলির বেশি প্রস্রাব করলে তাকে পল্যুরিয়া বা অতিরিক্ত প্রস্রাব বলে ধরা হয়। এ সময় বাচ্চা বিছানায় প্রস্রাব করতে পারে।

শিশুর অতিরিক্ত প্রস্রাবের কারণের মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদি বা জš§গত কিডনি রোগ, মানসিক সমস্যা, সংক্রমণ থেকে সৃষ্ট জটিলতা, কিডনির জš§গত ত্রুটি, রক্তে পটাশিয়ামের অভাব, কিংবা ক্যালসিয়ামের আধিক্য প্রভৃতি। সুনির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খাওয়ার কারণেও শিশুর অতিরিক্ত প্রস্রাব হতে পারে। কিডনির রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে অতিরিক্ত প্রস্রাবের পাশাপাশি শিশুর শ্বাসের সমস্যা, রক্ত কমে যাওয়া এবং শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। অনেক সময় তুলনামূলকভাবে বড় শিশুরা বেশি বেশি পানি পান করে। সেই অনুপাতে প্রস্রাবও করে বেশি। এ সমস্যাকে ‘সাইকোজেনিক পলিডিপসিয়া’ বলা হয়। তবে এতে আক্রান্ত শিশুরা রাতে ঘুম ভেঙে গেলে কিংবা সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করতে চায় না। এই সমস্যায় ভোগা শিশুদের প্রায়ই নানা মানসিক সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়।

প্রশ্ন হলো, শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ আসলেই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কি না। অতিরিক্ত হলে কত দিন ধরে হচ্ছে। এর সঙ্গে শিশুর শরীরে অন্য কোনো উপসর্গ আছে কি না। শিশুর দৈনন্দিন পানি পানের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করা যাচ্ছে কি না।

সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশু সাময়িকভাবে কিছুদিন বেশি প্রস্রাব করলে, কিংবা দু-এক দিন বিছানায় প্রস্রাব করলে শিশুটিকে লজ্জা দেবেন না, বরং লজ্জা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করুন। রাত ৮টার পরে শিশুটিকে পানি খেতে নিরুৎসাহিত করুন। এসব করলে অনেক সময় সমস্যা দূর হয়ে যায়।

শিশুটির সঠিক রোগ নির্ণয় ও কার্যকর চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি না করাই সমীচীন।

ডা. রবি বিশ্বাস

সহযোগী অধ্যাপক

ঢাকা শিশু হাসপাতাল