শিশুর ডেঙ্গুতে কখন হাসপাতালে নিতে হবে

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে বুঝবেন কীভাবে? এ ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো সাধারণত তিনটি ধাপে হয়ে থাকে:
জ্বরের ধাপ: এ ধাপের মেয়াদ দুই থেকে সাত দিন। এ সময় আক্রান্ত শিশুর অনেক জ্বর হয়। পাশাপাশি মাথাসহ শরীরে অনেক ব্যথা হয়। কথা বলতে না পারা ছোট্ট শিশুরা অকারণে কাঁদতে থাকে। বমি বমি ভাব বা বমি হয়। কখনও শরীরে লালচে র্যাশ হতে পারে।
ক্রিটিক্যাল ধাপ: এ ধাপে শিশুর জ্বর আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং অনেক শিশুর নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়: খুব দুর্বল লাগে; শরীর বেশ চুলকায়; নাক বা দাঁতের গোড়া থেকে, প্রস্রাব বা বমির সঙ্গেও রক্ত আসতে পারে; শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল স্পট পড়ে, রক্ত জমে কালচে দাগ হয়; অস্থিরতা বা বিরক্তি ভাব প্রকাশ করে; পেটে পানি আসে, পেট ফুলে যায়; রক্তচাপ কমতে থাকে। হাত-পা অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যায় বা ঠান্ডা লাগে। নাড়ির স্পন্দন কমে যায় ও জীবন হুমকিতে পড়ে।

সুস্থতার ধাপ: ক্রিটিক্যাল ধাপে কোনো জটিলতা না হলে শিশু পরবর্তী দুই থেকে তিন দিনে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।
জ্বর হলে করণীয়: দৈনন্দিন পরিচর্যা, গোসল, খাবার-দাবার আগের মতো করবে। তবে মাছ, মাংস, ডিমের পাশাপাশি ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, যেমন- মাল্টা, কমলা একটু বেশি দেয়ার চেষ্টা করুন; বেশি করে তরল, যেমন পানি, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি দিতে হবে। প্রতিদিন এক-দুই প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন দেয়া খুবই জরুরি; জ্বর কমাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল দিন। কোনোভাবেই অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রফেন-জাতীয় ওষুধ দেয়া যাবে না।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে— শিশুকে অনেক দুর্বল, হাত-পা ঠান্ডা বা অস্থির দেখাচ্ছে কি; বারবার বমি হচ্ছে কি; নিয়মিত প্রস্রাব করছে কিনা। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার ভেতর প্রস্রাব না হলে চিকিৎসকের নজরে আনতে হবে; নাক, দাঁতের গোড়া বা বমির সঙ্গে রক্ত আসছে কিনা; পায়খানার রং কালচে হচ্ছে; শরীরের কোনো স্থানে রক্ত জমাট বাঁধার মতো মনে হচ্ছে কিনা; পেটব্যথা বা পেটে একটু চাপ দিলে ব্যথা পাচ্ছে; পেট ফোলা লাগছে; শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে; কিশোরীদের অতিরিক্ত মাসিক হচ্ছে বা রক্ত আসছে; শোয়া অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। দাঁড়ালেই মাথা চক্কর দিচ্ছে। এসব লক্ষণ থাকলে অবশ্যই দেরি না করে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।