নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শিশু সন্তানদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনে নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো কোথায় দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করবে, কারা পরিচালনা কমিটিতে থাকবে, খবচ, খাবারের মান, ভর্তি ও ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদান ও নিরাপত্তা পদ্ধতি কেমন হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট’ থেকে জারিকৃত নীতিমালাটি অনুসরণ করার জন্য সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
তথ্যানুযায়ী, এ নীতিমালায় লিঙ্গ ভেদাভেদ না করে প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর শিশু সন্তানদের বিনা খরচে অথবা তাদের সাধ্যানুযায়ী খরচের মধ্যে উপযুক্ত শিশু পরিচর্যার সুবিধা প্রদানের জন্য গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। কর্মজীবী নারী-পুরুষের শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশ ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যেই দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালাটি জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, তফসিলি ব্যাংকগুলো এককভাবে বা একক কেন্দ্রস্থলে যৌথভাবে তাদের অফিস ভবনে বা নিকটবর্তী সুবিধাজনক যে কোনো স্থানে শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারবে। প্রতিটি শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একজন মহাব্যবস্থাপক বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তার সভাপতিত্বে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। এ কমিটি কেন্দ্রের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকবে। তবে প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান করার সময় কিছু বিষয় দেখতে বলা হয়েছে। দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনায় যাদের অভিজ্ঞতা এবং সুনাম রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনার দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক প্রতিনিধি, একজন ডাক্তার এবং শিশুদের অভিভাবক থেকে মনোনীত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পরিচালনা কমিটি একটি ওয়েলফেয়ার কমিটি গঠন করার নির্দেশও প্রদান করা হয়েছে।
তবে ব্যাংকে কর্মরতরা সর্বোচ্চ দুটি সন্তানকে দিবাযত্ন কেন্দ্রে ভর্তি করতে পারবেন। বয়স হতে হবে ছয় মাস থেকে ছয় বছরের মধ্যে। আর কেন্দ্রের আসন সংখ্যার চেয়ে আবেদনপত্র বেশি হলে শিশুদের বয়োঃকনিষ্ঠতার ক্রমানুসারে আসন বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে। যার প্রমাণস্বরূপ জন্ম সনদ দাখিল করতে হবে। দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় এবং সব স্থায়ী ব্যয় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোকে বহন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। প্রতি শিশুর বিপরীতে ২ হাজার ৫০০ টাকার অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে নীতিমালায়।
এছাড়া নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যাপকভাবে গুরুত্ব প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিকিউরিটি অ্যালার্ম ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রটি সার্বক্ষণিক সিসিটিভি নজরদারিতে থাকবে এবং সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সর্বনিম্ন ৩০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকতে হবে। আর কেন্দ্রে প্রবেশের মূল দরজায় এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম থাকবে। স্টাফদের মাধ্যমে যাতে কোনো সংক্রমণ রোগ ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য সেবাপ্রদানকারী স্টাফদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আর কোনো শিশুর অভিভাবক ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।