Print Date & Time : 23 July 2025 Wednesday 7:24 am

শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য

কয়েকদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের তীব্রতা অনেক বেড়েছে। বর্তমান শৈত্যপ্রবাহ আর ঠান্ডা দেশের উত্তরাঞ্চলের নি¤œ আয়ের জনগণ অত্যন্ত কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, সেই সঙ্গে ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

শীতের সময় করোনাভাইরাসের আরেক দফা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। এজন্য নানা প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। তবে শীতকালে দেশের কোথাও শীত বেশি কম হতেই পারে, এতে কারও হাত নেই, এটি প্রাকৃতিক। তবে এক্ষেত্রে শীতার্তদের জন্য আমাদের অনেক কিছুই করণীয় আছে। সরকারের পাশাপাশি আমরাও পারি শীতার্তদের জন্য আমাদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে।

শীতের সময় শহরাঞ্চলের মানুষদের তুলনায় গ্রামের সাধারণ মানুষগুলো বেশি অসহায় হয়ে পড়ে। তারা যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার কিনতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে উঠে, সেখানে শীতের বস্ত্র কেনা অসম্ভব।

গ্রামের এসব মানুষের অনেকের পক্ষে আলাদাভাবে শীতের কাপড় কেনা দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। প্রতি বছর শীতের সময় দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা এমনকি ব্যক্তিপর্যায়ে শীতার্ত মানুষের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। অতীতে সরকারি পর্যায়েও গরিব মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবার সে ধরনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। অন্যদিকে দেশে অস্বস্তিকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাবের কারণে এক ধরনের জ্বরাগ্রস্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর প্রভাব সামাজিক কর্মকাণ্ডের ওপরও পড়ছে। কিন্তু সমাজের বিত্তবান ও মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা যদি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে মানুষের দুর্ভোগ শুধু বাড়বেই। এ ক্ষেত্রে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোগের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি থেকে শীতার্তদের রক্ষা করা যায়।

সমাজের বিত্তবানরা চাইলেই ছিন্নমূল মানুষদের এ হাড়কাঁপানো শীতের সময় সাহায্য করতে পারেন। একটু সহযোগিতার মাধ্যমেই সমাজে বসবাসরত গরিব অসহায় মানুষগুলোর মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

ছিন্নমূল মানুষগুলো শুধু শীতের সময় কষ্ট পায় না, গরিবের দাবদাহ ও বর্ষার অঝোর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে জীবননাশের পরিক্রমায় পরিণত হয়ে পড়ে। দেশের নিন্মাঞ্চলের মানুষগুলো বর্ষাকালে আশ্রয়স্থল, খাবাবের সংকটে পড়ে। তাদের বেঁচে থাকা অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়।

যদি আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রতি একটু মানবতা দেখাই এবং পাশে দাঁড়াই তাহলে আমরা তাদের অশান্তি একটু হলেও দূর করতে পারব। পাশাপাশি তাদের মুখে হাসি ফুটাতে সক্ষম হবো। এই কনকনে শীতে ফুটপাত, রেলস্টেশন ও বস্তিতে বসবাস করার মানুষগুলো শান্তিতে নেই। আমাদের সবার উচিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া। সরকারের পাশাপাশি আমরা সবাই এগিয়ে এলে শীতার্তরা উপকৃত হবে।

প্রসেনজিৎ চন্দ্র শীল

শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

ঢাকা কলেজ