শীতে হাঁপানি রোগীর প্রস্তুতি

শীতকাল অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের জন্য কষ্টকরই বটে। যারা ভোরে বা সন্ধ্যায় হাঁটেন তারা এ সময়টা পরিহার করুন। কারণ এ সময় পরিবেশের তাপমাত্রায় তারতম্য হয় বেশি, শিশির পড়ে, কুয়াশা হয় আর তাই ঠাণ্ডা লাগার আশঙ্কাও বেশি। একটু বেলা করে হাঁটুন বা ঘরে ব্যায়াম করুন।

পরিবেশে ধুলাবালি ও উড়ন্ত ফুলের রেণু, কণা এ সময় বেশি থাকে। বাইরে গেলে তাই সতর্ক থাকবেন। মাস্ক আপনাকে উড়ন্ত ধুলাবালি থেকে রেহাই দেবে।

যথোপযুক্ত গরম কাপড় ব্যবহার করুন। ঠাণ্ডায় বা সকালে বাইরে বের হওয়ার সময় টুপি বা মাফলার পরলে ঠাণ্ডা হাওয়া থেকে বাঁচাবে। পায়ে মোজা পরুন। কারও উলের কাপড়ে হাঁপানি বাড়ে, তারা মোটা সুতি কাপড়, সুতি মোজা পরুন। বাড়িতে খালি পায়ে হাঁটবেন না। শীতের শুরুতে হাঁপানি রোগীদের ফ্লু আর নিউমোনিয়ার টিকা দিয়ে নেয়া উচিত। বাড়িতে ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধের মজুত, মেয়াদ দেখে নিন। বাড়িতে নেবুলাইজার ব্যবহার করলে তাও পরখ করে নিন। শীতের শুরুতে একবার আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও ইনহেলারের ডোজ ঠিক করে নিন।

কভিড এখনও চলে যায়নি, বরং নতুন নতুন ধরনে ফিরে আসছে। কভিডের উচ্চ ঝুঁঁকিতে আছেন শ্বাসতন্ত্রের রোগীরা। তাই মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলুন। কভিড টিকা না নিয়ে থাকলে দ্রুত নিয়ে নিন।

শ্বাসকষ্ট হঠাৎ বেড়ে গেলে রোগীকে সোজা হয়ে বসবেন। আতঙ্কের কিছু নেই। উপশমকারী সালবিউটামল বা সালবিউটামল ও ইপরাট্রোপিয়াম যুক্ত ইনহেলার স্পেসারের সাহায্যে ধীরে ধীরে পাঁচটি চাপ নিন। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে খেয়াল করুন, শ্বাস বড় করে ওষুধ ঠিকমতো টেনে নেয়া হচ্ছে কি না, খেয়ে ফেললে কাজ হবে না। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। বিশ্রাম নিন। তারপরও শ্বাসকষ্ট না কমলে আবার পাঁচবার চাপ দিয়ে শ্বাস নিন। এভাবে পাঁচবার মোট ২৫ চাপ নেয়া যেতে পারে। এরপরও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির টান না কমলে রোগীকে কাছাকাছি হাসপাতালে নিতে হবে বা নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। হাসপাতালে পৌঁছার আগ পর্যন্ত পাঁচ চাপ করে ইনহেলার নিতে থাকবেন।

শুরুতেই জিব, নখ বা আঙুল নীল হয়ে এলে, শ্বাসকষ্টের জন্য কথা পর্যন্ত না বলতে পারলে বা চেতনা হারিয়ে যেতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ছাড়াও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।

ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান

মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ