Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 10:09 am

শুল্কমুক্ত সুবিধার মদ যেত ক্লাবে ওয়্যারহাউজ সিলগালা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাস ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থায় কর্মরত বিদেশিদের (প্রিভিলেজড পারসন) মদ ও মদজাতীয় পানীয় সরবরাহের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় সেগুলো আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুল্কমুক্ত সুবিধার এ মদ ও মদজাতীয় পানীয় বিভিন্ন ক্লাবে সরবরাহ করা হয়। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে আসছে ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

এর বাইরে গুলশান-২ এলাকার প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম ভেঙে ফেনসিডিল বিক্রি ও অবৈধভাবে মদ মজুত করে আসছে। গতকাল র‌্যাবের অভিযানে বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দিয়েছে র‌্যাব। ডিপ্লোম্যাটিক বন্ড সুবিধা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক ওয়্যারহাউজ লিমিটেডে অভিযান চালিয়ে সাত লাখ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। গতকাল রাতে অভিযানটি চালায় র‌্যাব ও ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবেও মদ সরবরাহ করে আসছিল গুলশানের ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক ওয়্যারহাউজ। এছাড়া অনুমোদনের বাইরে বাড়তি মাদক মজুত ছিল সেখানে। গুলশান ২-এর ১০৮ নম্বর সড়কের ২৩ নম্বর ভবনে অবস্থিত ওয়্যারহাউজে অভিযান চালিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, অভিযান শেষে ওয়্যারহাউজটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৮টায় অভিযান শুরু হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৮৬ বোতল বিদেশি মদ, ৮৫ বোতল ফেনসিডিল ও সাত লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক ওয়্যারহাউজ থেকে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে মদের বোতল সরবরাহ করা হতো। এ ছাড়া এখানে ফেনসিডিল রাখার কোনো বৈধতা নেই। এর পরও তারা নির্ধারিত মজুতের বেশি মদ ও ফেনসিডিল অন্যত্র সরবরাহের জন্য মজুত রাখে, যা আইনগতভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, কাস্টমসের আইন অনুযায়ী বাড়তি মাদক পাওয়ায় তার ১০ গুণ পরিমাণ জরিমানার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া অনুমোদনের বাইরে ফেনসিডিলের মতো মাদক পাওয়াায় ক্রিমিনাল ল’তেও মামলা করা হবে। ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে প্রায় ৬০ লাখ টাকার শুল্ককর ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

এনবিআর সূত্র জানায়, ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ডিপ্লোম্যাটিক বন্ড লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, মেসার্স ঢাকা ওয়্যারহাউজ লিমিটেড, মেসার্স ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসেস, মেসার্স এইচ কবির অ্যান্ড কোং লিমিটেড, মেসার্স টস বন্ড প্রাইভেট লিমিটেড, ন্যাশনাল ওয়্যারহাউজ ও মেসার্স সাবের ট্রেডার্স লিমিটেড। এছাড়া বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। এ সুবিধা ভোগ করতে পাশবই ইস্যু করে এনবিআর। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর ভুয়া ও মেয়াদোত্তীর্ণ পাশবুক দেখিয়ে শত শত কোটি টাকার শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা করছে এনবিআর।