ক্রয়াদেশ স্থগিত মার্কিন ক্রেতাদের

শুল্কের কারণে পোশাক রপ্তানিতে অনিশ্চয়তা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাবে মারাত্মক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। মার্কিন ক্রেতারা একের পর এক অর্ডার স্থগিত করছে বলে জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারকরা। খবর : খালিজ টাইমস, ডন, এএফপি

গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের তুলাজাত পণ্যের ওপর শুল্ক ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশে উন্নীত করেন। এ সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়েছে, যেখানে তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাত দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ জোগান দেয়।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন নতুন শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা তিন মাস পিছিয়ে দেয়া হয়। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চায়। ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রস্তাবিত রপ্তানির মধ্যে রয়েছে তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিন; যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদেরও উপকারে আসবে। এ পরিস্থিতিতে দেশীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এসেনসর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান জানান, রোববার তার একজন দীর্ঘদিনের মার্কিন ক্রেতা ৩ লাখ ডলারের চামড়াজাত পণ্যের চালান স্থগিত করতে বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা দুজনেই এ পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছি। মুশফিকুর রহমান ২০০৮ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছেন এবং মাসে গড়ে ১ লাখ ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেন।

অন্যদিকে, তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান উইকিটেক্স বিডির সিইও একেএম সাইফুর রহমান জানান, তার মার্কিন ক্রেতা ১.৫ লাখ ডলারের একটি চালান স্থগিত করার কথা জানিয়েছেন। সাইফুর রাহমান আরও বলেন, ক্রেতা বলেছেন তারা অতিরিক্ত খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপাতে পারবেন না; তাই আমাদের দাম কমাতে হবে।

এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সরকার নিযুক্ত প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন মার্কিন ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠিতে সহানুভূতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, আমরা জানি অনেক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা ইতোমধ্যে তাদের সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে; তবে এ মুহূর্তে সরবরাহকারীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ দিলে সংকট আরও গভীর হবে।