প্রতিনিধি, শেরপুর: শেরপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কৃষক সাদেক হত্যার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া এবং এ হত্যার প্রতিবাদে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে বাদীকে প্রাণনাশ ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন খুন হওয়া সাদেকের ছেলে এবং এ হত্যা মামলার বাদী আল আমীন।
গতকাল শুক্রবার সকালে শেরপুর সদর উপজেলার ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের চর দুবলাই গ্রামের প্রধান সড়কে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন পালন করা হয়। এসময় গ্রামবাসী ও নিহত সাদেকের স্বজনরা আসামিদের ফাঁসির দাবি তোলেন এবং আসামিদের অব্যাহত হুমকির প্রতিবাদ করেন। সেই সঙ্গে তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন বলেও অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চর দুবলাই গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের দুই ছেলে সাদেক আলী (৬২) ও চান মিয়ার (৫২) মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ২৭ আগস্ট সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে কৃষক সাদেক আলী জমি চাষ দিতে যান। এসময় চান মিয়া, তার স্ত্রী সবুজা বেগম (৪৫) এবং তার দুই ছেলে যথাক্রমে সুমন মিয়া (৩০) ও সোলাইমানসহ (২৫) একই গ্রামের আফজাল ও পার্শ^বর্তী পশ্চিম পাড়ার উজ্জ্বল এসে সাদেক আলীর ওপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। পরে তারা সাদেক আলীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
এদিকে এ খবর পেয়ে সাদেক আলীর অন্য আত্মীয়রা এসে তাকে প্রথমে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু দুদিন পর ২৯ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদেক আলীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়, কিন্তু ওই দিন রাতেই তিনি মারা যান।
পরে এ ঘটনায় উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে সাদেক আলীর একমাত্র ছেলে আল আমীন বাদী হয়ে ১ সেপ্টেম্বর শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু মামলা করার পর থেকে আসামি সবাই পালাতক থেকে সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে। এর পর থেকে আসামিরা প্রকাশ্যে বাদী এবং তার বোন ও বোন জামাইসহ অন্য আত্মীয়স্বজনকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করেন তারা। এরই মধ্যে আসামিরা তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করেছে। তারা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলেও দাবি করেন।
এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার ওসি বশির আহমদ বাদল জানায়, বাদী ও আসামিরা পরস্পর ভাই-ভাতিজা। আসামিরা বাদী পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে, এ বিষয়ে তারা থানায় জানায়নি এবং থানায় কোনো জিডিও করেনি। এছাড়া মানববন্ধনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে তিন সপ্তাহের জামিনে রয়েছে। সময় শেষে নি¤œ আদালতে হাজির হলে আটকে যেতে পারে।