প্রতিনিধি, শেরপুর: শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার চাঞ্চল্যকর এক মামলায় ফুরকান আলী (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আসামির অনুপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। একইসাথে মামলার অপর ৩ আসামি ফুরকানের বাবা ময়দান আলী (৫৯), মা ফুলেতন বেগম (৪৯) ও আত্নীয় সওদাগর আলী (৬১) কে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
ফুরকান আলী শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের চেল্লাকান্দি এলাকার ময়দান আলীর ছেলে ও এক সন্তানের জনক। রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন।
শেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুালের পিপি এ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১১ সালের ২ জুলাই রাতে ফুরকান আলী তার স্ত্রী শ্রীবরদী উপজেলার বড়গেরামারা এলাকার আব্দুল জব্বারের মেয়ে জহুরা বেগমকে (২৩) যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মারপিট ও শ্বাসরোধে হত্যার পর তার লাশ নিজ ঘরের ধর্ণায় ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রাখেন। ওই ঘটনায় পর দিন ফুরকান আলী, তার বাবা-মা ও ২ আত্মীয়সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করেন জহুরা বেগমের বড় ভাই ফজলুল হক। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ নভেম্বর ফুরকানের আত্মীয় আজিজুর রহমান ব্যতীত ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন শ্রীবরদী থানার এসআই নুরুল আমিন খান। পরবর্তীতে একমাত্র ময়দান আলী হাজির হয়ে বিচারের মুখোমুখি হলেও অপর ৩ আসামিই পলাতক থাকে। ফলে মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘসূত্রিতা। মামলায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বাদী, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৬ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমাণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক) ধারায় আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ফুরকান আলীকে ওই দণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া একই আইনে সহায়তার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপরাপর আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।