তুহিন ইসলাম, মেহেরপুর: আসন্ন কোরবানির ঈদ আসতে আর মাত্র বাকি কয়েক দিন। মেহেরপুরের গরুর হাটগুলোয় ব্যাপকহারে গরু আমদানি হলেও এবার ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম। এবার হাটের বেশিরভাগ গরু যাচ্ছে রাজধানী ঢাকার হাটগুলোয়। তবে এবারের হাটে গরুর দাম নিয়ে সন্তুষ্ট ক্রেতারা, অন্যদিকে লাভের আশা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
মেহেরপুর জেলায় গরুর হাট রয়েছে দুটি। এর মধ্যে একটি মেহেরপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গোহাট এলাকায়, অন্যটি গাংনী উপজেলার বামন্দীতে। এ দুটি হাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং প্রাচীন হাট হলো বামন্দী নিশিপুর গরুর হাট। এই হাটে জেলা এবং জেলার আশপাশে থেকে ব্যাপক গরু আমদানি করা হয়। এবারও এই হাটে ব্যাপক গরুর আমদানি হয়েছে। প্রতি হাটেই কয়েক হাজার গরু নিয়ে আসেন খামারি, ব্যবসায়ী ও গরু লালনপালনকারীরা। তবে এ বছর বড় গরুর চেয়ে মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে এই পশুর হাটে গরু কিনতে আসছেন ব্যাপারীরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হলেও চাহিদা বেশি থাকায় লাভের আশা দেখনেছ জেলার বাইরে থেকে আসা ব্যাপারীরা। তবে ঢাকার হাটে এসব গরু বিক্রি করে লাভবান হবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কাও আছে তাদের মাঝে।
গরু খামারি ইনার আলী বলেন, ‘আমি হাটে আটটি গরু নিয়ে এসেছি। এরই মধ্যে তিনটি গরু বিক্রি করতে পেরেছি। হাটে যা দাম বলা হচ্ছে, তাতে প্রতিটি গরু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা কম বলা হচ্ছে। এখন এই তিনটি গরুতে কিছুটা লাভ হয়েছে, কিন্তু গরুর খাবারের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, তাতে আমাদের খুব একটা লাভ থাকবে না।’
আরেক খামারি বক্স মিয়া বলেন, ‘আমি চারটি গরু নিয়ে এসেছি হাটে। মনে করেছিলাম কিছুটা লাভ হবে। কিন্তু কেনাবেচার পর খুব বেশি লাভ হয়নি। এবারের হাটের গরুর দাম এভাবে থাকলে আমরা লোকসানের মধ্যে পড়ব। এই হাটে এবার ছোট গরুগুলো ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরুগুলো এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং একটু বড় সাইজের গরুগুলো তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।’
ঢাকা থেকে আসা গরুর ব্যাপারী আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা কিছুটা লাভের আশায় গরু কিনতে এসেছি এই হাটে। গতবারের তুলনায় এবার একটু দাম কম মনে হচ্ছে। এবার হাটে গরু সরবরাহ বেশি। সকাল থেকে হাট ঘুরে ঘুরে ২৯টি গরু কিনেছি। আশা করছি ঢাকায় এই গরুগুলো বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হব।
গরু কিনতে আসা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘এবার হাটে গরুর সরবরাহ বেশি হয়েছে। খাবারের দাম বেশি হওয়ায় গরুর দাম কিছুটা বেশি। তবে হাট ঘুরে ঘুরে একটি গরু পছন্দ হয়েছে। দাম পড়েছে ৬৫ হাজার টাকা। আমি নিজেই কোরবানি দেব। তবে এই দামে আমি সন্তুষ্ট।’
বামুন্দী হাট ইজারাদার আমিরুল ইমলাম, এবার গরুর হাটে গরু আমদানি বেশি হয়েছে, প্রতি হাটেই কয়েক হাজার গরু আসছে। সবাই দেখেশুনে গরু কিনতে পারছেন। কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করেছে প্রশাসন। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। সবাই নির্বিঘেœ কেনাবেচা করতে পারছেন।