নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমরা কঠোরভাবে শেয়ারবাজার মনিটর করি। এখানে ২০১০ সালের ধসের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ নেই এবং বর্তমানে সূচকের ওঠানামাও স্বাভাবিক।’ গতকাল ‘এসএমই খাতের উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এসব কথা জানিয়েছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজারের সূচক বাড়ার পর কিছুটা কমতে পারে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের বিনিয়োগকারীরা অল্পতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পড়তি বাজারে কেনা শুরু করলে বাজারে উঠে যাবে।
‘শেয়ারবাজারে ওঠানামা স্বাভাবিক। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট বাজারের ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় বিক্রি করেন এবং নিম্নমুখী অবস্থায় ক্রয় করেন। এটাই উচিত। কিন্তু আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের আচরণ উল্টো’Ñযোগ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা কঠোরভাবে শেয়ারবাজার মনিটর করি। এখানে ২০১০ সালের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ নেই। কে কোন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে, সেটা আমরা দেখি না বা কারও পোর্টফোলিও ম্যানেজ করি না। অথচ বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলেই আমাদের দোষারোপ করেন, লাভ করলে আবার কিছু বলেন না।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘যে কোনো ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পরিচর্যা ও সুপারভিশনের (তত্ত্বাবধান) দরকার পড়ে। এজন্য আমাদেরও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো দেখভাল করতে হয়। এটা করতে গিয়ে অনেক কোম্পানির বিশেষ নিরীক্ষাও করতে হয়। সেখানে এমন সব তথ্য উঠে আসে, যা দেখে নিজেরাই ভয় পেয়ে যাই।’
বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন অসংখ্য কোম্পানির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে বৈঠকে বসি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা বা মনোভাব দেখার চেষ্টা করি। অনেক কোম্পানির ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা পাচার এবং অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রে আবার সত্যিই ব্যবসা খারাপ হওয়ার মতো ঘটনা দেখতে পাই। এক্ষেত্রে যে কোম্পানির জন্য যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তাই নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা পাচারকারীদের শাস্তি দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের গুরুত্ব অনেক উল্লেখ করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এ খাত এগিয়ে নিতে কাজ করছি। এখন শেয়ারবাজার থেকে এসএমই খাতের কোম্পানিগুলো অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে মূল মার্কেটের তুলনায় অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরও সুবিধা দেয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘শেয়ারবাজারে এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লেনদেনে গতি ফেরাতে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে এমন বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সুযোগ দেয়া উচিত। অন্যথায় এ খাতে লেনদেনে গতি ফিরবে না। একই সঙ্গে এ খাতের উন্নয়নে প্রথম দুই বছর কোম্পানিগুলোকে লভ্যাংশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত।’
অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ডিএসইর পরিচালক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মাসুদুর রহমান, ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
