শেয়ার কেনার চাপে সূচকের টানা উত্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের ছুটি শুরুর আগে আর দুই কার্যদিবস লেনদেন হবে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে গতকাল সূচক কেনার চাপে টানা উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। সব সূচক ইতিবাচক হওয়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়ে ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বেড়েছে ৬৪ শতাংশ শেয়ারদর। কমেছে ২০ শতাংশের দর। গতকাল লেনদেনের শুরু থেকে সূচক ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সামান্য নি¤œমুখী হলেও খুব অল্প সময়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী গতি অব্যাহত থাকে। লেনদেন শেষে ৭৫ পয়েন্ট ইতিবাচক হয় সূচক। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৫ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৩২৮ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১৮ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ২০৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস ৩০ সূচক ৩৩ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৮৬১ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন তিন লাখ ৯১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা হয়। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৪০৩ কোটি ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এদিন ১১ কোটি ৫০ লাখ পাঁচ হাজার ৪০টি শেয়ার ৯৯ হাজার ৯৬৪ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৪৯ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২৫টির, কমেছে ৭০টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৫৪টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ছয় টাকা ২০ পয়সা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ারের ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে সাত টাকা ৬০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ১০ পয়সা। এরপরের অবস্থানে থাকা প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১১ কোটি ছয় লাখ টাকা লেনদেন হয়। বিএটিবিসির ১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের আট কোটি ৯০ লাখ টাকা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আট কোটি ৪৯ লাখ টাকা, উত্তরা ব্যাংকের আট কোটি ৭৭ লাখ টাকার, ইস্টার্ন কেব্লসের সাত কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে নিউলাইন ক্লোথিংস। এরপরে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দর ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, বিএটিবিসির দর পাঁচ দশমিক ৭৬ শতাংশ, জেএমআই সিরিঞ্জের দর পাঁচ দশমিক ২৩ শতাংশ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর পাঁচ দশমিক ১৪ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের দর চার দশমিক ৭৮ শতাংশ, স্টান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের দর চার দশমিক ৭৪ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড মিলের দর চার দশমিক ৭১ শতাংশ, এমএল ডায়িং চার দশমিক ৬৪ শতাংশ, এসকে ট্রিমসের দর চার দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স। ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি মিউচুয়াল ফান্ডের দর ছয় দশমিক ১৭ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর পাঁচ দশমিক ১৪ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর পাঁচ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ, রূপালী লাইফের দর তিন দশমিক ৯৭ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের দর তিন দশমিক ৯৪ শতাংশ, ইসলামিক ইন্স্যুরেন্সের দর তিন দশমিক ৬৬ শতাংশ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর তিন দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর তিন দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাইম লাইফের দর দুই দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৫০ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ৮৪৫ দশমিক ৯০ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪২ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে ১৬ হাজার ২৬০ দশমিক ৪২ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৪৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৮টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির দর।
সিএসইতে এদিন ৪১ কোটি ১২ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ৭০ লাখ ১৯ হাজার ৬১০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর বিএটিবিসির ১৩ কোটি ৯ লাখ টাকা, ডরিন পাওয়ারের এক কোটি ১৩ লাখ টাকা. আইএফআইসির ৮৪ লাখ টাকা, বেক্সিমকোর ৭১ লাখ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ৪৭ লাখ টাকা, এনবিএল ৪৩ লাখ টাকা, রানার অটোমোবাইলের ৩৯ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৩৫ লাখ টাকা ও ডেসকোর ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।