Print Date & Time : 8 July 2025 Tuesday 8:47 am

শ্রীপুরে শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা

প্রতিনিধি, শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুরে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে পারছেন না ধানচাষিরা। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় তাপমাত্রা যেন কোনোভাবেই কমছে না। সকাল থেকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। দেশজুড়ে চলা গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শ্রীপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। গরমে দিশাহারা হয়ে পড়েছে মাঠে থাকা কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে এ সময় চরম বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার ইরি-বোরো ধান চাষিরা। তীব্র গরমে মাঠে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, আর শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। এদিকে ক্ষেতের পর ক্ষেত ধান পেকে গেছে আবার কিছু কাঁচা ধান কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। তীব্র তাপপ্রবাহের পর যদি বৃষ্টি শুরু হলে ক্ষেতে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এই উপজেলায় ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে ৪০ শতাংশ জমির ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।

সোমবার সকালে সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গরমের কারণে ভোর থেকেই ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন অনেক চাষি। তবে দুপুর ১২টার পর তীব্র গরমে মাঠে কাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। কিছু সময় কাজ করলেই হাঁপিয়ে উঠছেন। ঘামে পরনের কাপড় ভিজে একাকার। কাজের মাঝে বারবার বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। এতে কাজের গতি কমে যাচ্ছে। গরমের কারণে ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আর শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের পারিশ্রমিক বেশি দিতে হচ্ছে। এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত হলে ইরি-বোরো ধান ক্ষেত নষ্ট যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। তাই তীব্র গরমকে সঙ্গে নিয়েই ধান কাটছেন কৃষকরা।

উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বদনী ভাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই নিজে নিজেই ধান কাটছি। ভারী বৃষ্টিপাত হলেও ধান তলিয়ে যেতে পারে। সেজন্য কিছু কাঁচা থাকলে কেটে ঘরে তুলতে হবে।

গরমে শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা হয় উপজেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরমে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, বৃষ্টিহীন পরিবেশ থাকলে কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে পরবর্তী ধাপে যাওয়া সহজ হয়। এজন্য এই পরিবেশকে কৃষক ইতিবাচকভাবেই নেয়। কিন্তু তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকদের দুপুরের সময় মাঠে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। শ্রীপুরে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা।