Print Date & Time : 6 August 2025 Wednesday 4:57 am

সংকটে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা

শেয়ার বিজ ডেস্ক : সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিয়ে সংকটে রয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)। সংস্থাটির একটি আপিল আদালত রয়েছে, যা বাণিজ্য বিরোধের চূড়ান্ত সালিশি ব্যবস্থা। এ আদালত এখন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। খবর: বিবিসি।

ডব্লিউটিও’র নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি মামলায় তিনজন বিচারককে শুনানি করতে হবে। কিন্তু আগামী ১০ ডিসেম্বর এ বিচারকদের দুজন শর্ত অনুযায়ী আর থাকছেন না। বিচারক থাকছেন শুধু একজন। ওই দুজনের বিপরীতে এখনও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত নিয়োগ-সংক্রান্ত কোনো প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্র নতুন বিচারক নিয়োগের বিষয়ে অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যদিও অন্য সদস্য দেশগুলো বারবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তাব দিয়েছে। গত মাসের শেষ পর্যন্ত ১০০-এর বেশি সদস্য দেশ এ আবেদন জানালেও যুক্তরাষ্ট্র একাই তাতে রাজি নয়। যুক্তরাষ্ট্রই একটি মাত্র দেশ, যে ডব্লিউটিওর বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।

ডব্লিউটিও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এ ব্যবস্থাটি সংস্থাটির অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কাজে পরিণত হয়। সংস্থাটির সাবেক মহাপরিচালক প্যাস্কেল ল্যামি ব্যবস্থাটিকে ডব্লিউটিওর ‘মুকুট রতœ’ বলে অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি কোথায়? সম্ভবত দেশটির সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে নিষ্পত্তি ব্যবস্থায় ‘জুডিশিয়াল ওভাররিচ’। অর্থাৎ, এ ব্যবস্থা ডব্লিউটিওর নিয়মকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করে, যা সদস্য দেশগুলোর জন্য নতুন বাধ্যবাধকতা তৈরি করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশীয় শিল্প বাঁচানোর অভিযোগে চীনা পণ্য এবং ইউরোপের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন। এসব দেশ ডব্লিউটিওর সালিশি আদালতে মামলা করেছে। ট্রাম্পের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র এসব মামলায় হারবে। ডব্লিউটিও নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ, এর নিয়ম-নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য সদস্য দেশগুলো সুবিধা নিচ্ছে। গত বছর সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, ডব্লিউটিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। সেখানে খুব কমই মামলা জিতেছে তারা। আর এবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, গত বছর থেকে আমেরিকা মামলা জিততে শুরু করেছে। কারণ তারা জানে, তা না হলে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাবে।

গত বছরের মার্চে প্রথম বাণিজ্য যুদ্ধের দামামা বাজিয়েছিলেন ট্রাম্প। তারপর থেকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছেন চীন, ভারত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে। অভিযোগ করেছেন, ডব্লিউটিওর প্রতি চীনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক চাপানোর পর থেকে ভারতসহ একের পর এক দেশ ডব্লিউটিএ’র কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরজি জানিয়েছে।