নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদ সদস্যরা এখন থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাইব্রিড এবং বৈদ্যুতিক গাড়িও আমদানি করার সুযোগ পাবেন। নিয়ম ও শর্ত মেনেই এসব গাড়ি আমদানি করতে পারবেন। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এনবিআর সূত্রমতে, এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৮ সালে প্রথম এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হলেও পরের সব সরকারই সে সুযোগ বহাল রেখেছে। ওই সুবিধায় গাড়ি আমদানির পর বিক্রি করে দেওয়ার বেশ কিছু ঘটনা আলোচনায় এলে ২০১০ সালে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। সে অনুযায়ী একাধিকবার নির্বাচিত এমপিরা সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় গাড়ি আনতে পারেন। প্রথম গাড়ি কেনার ৫ বছর পর সংসদ সদস্য থাকলে দ্বিতীয় গাড়ি আনা যায়।
সূত্র আরো জানায়, সংসদ সদস্য হলেই শর্ত সাপেক্ষে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করা যায়। তবে আগে শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়ির তালিকায় হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক গাড়ি ছিল না। অথচ বহির্বিশ্বে এখন এই দুই ধরনের গাড়ির চাহিদা ব্যাপক। সেজন্য সংসদ সদস্যদের অনুরোধে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। এখন থেকে সংসদ সদস্যরা চাইলে বিনাশুল্কে হাইব্রিড ও ইলেক্ট্রিক গাড়ি আমদানি করতে পারেন। সেই সুযোগ রেখে এনবিআর নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিনা শুল্কে ১৬৫০ সিসি থেকে ৪৫০০ সিসির মোটর বা জিপ ডিজেল, পেট্রোল, হাইব্রিড অথবা বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি করতে পারবেন। পুরোপুরি বিদেশে তৈরি ১৬০০ থেকে ২০০০ সিসি সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির একটি গাড়ি আমদানি করতে এখন ২২১ শতাংশ কর ও শুল্ক দিতে হয়। ২০০০ থেকে ৩০০০ সিসিতে এর পরিমাণ হয় ৩৬৫ শতাংশ। আর ৩০০০ থেকে ৪০০০ সিসির ক্ষেত্রে ৮২৬ শতাংশ কর ও শুল্ক গুণতে হয়।
আরো বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ৪০০০ সিসির একটি নতুন টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার-ভি ৮ এর দাম যদি ৭০ হাজার ডলারের মত হয়, তাহলে বাংলাদেশে টাকায় তা হয় ৬০ লাখ টাকার বেশি। বাংলাদেশে আনার পর শুল্ক কর মিলিয়ে তার দাম দাঁড়ায় ৫ কোটি টাকার মত। অর্থাৎ, একজন সাধারণ নাগরিককে যখন ওই গাড়ি আমদানি করতে ৫ কোটি টাকা গুনতে হবে, একজন এমপি মাফ পাবেন প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। অবশ্য পরিবেশবান্ধব বিবেচনায় হাইব্রিড গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ক-কর কিছুটা কম। ৪ হাজার সিসির একটি নতুন হাইব্রিড গাড়ির জন্য ২১২ শতাংশ শুল্ককর দিতে হয়।
###
