সকালে খালি পেটে কোন ধরনের পানীয় পান করা আসলেই উপকারী, এমন কিছু পানীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
লেবু-মধু-পানি: হার্ট ভালো রাখা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, ত্বক ভালো রাখা, হজমপ্রক্রিয়া সচল রাখা, ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যার সমাধানসহ নানা ধরনের উপকার পাওয়া যায় এই পানীয় পান করলে। কুসুম গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পান করলে এসিডিটি, দাঁতের সমস্যা বৃদ্ধি, হƒৎপিণ্ডের জ্বালাপোড়া, অনিয়ন্ত্রিত সুগারসহ বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে।
ইসবগুল-পানি: যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের কাছে দীর্ঘ সময় ধরে পরিচিত পানীয় এটি, যা ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে। এ ছাড়া হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে এবং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা চর্বির পরিমাণ কমাতে ভালো কাজ করে। পানিতে মিশিয়ে পান করা যায়। মনে রাখতে হবে, এই পানীয় মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণে বমি-বমি ভাব, মাঝেমধ্যে পেটে ব্যথা, ক্ষুধা কম লাগাসহ কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
চিয়া সিড-পানি: ভালো ফ্যাটের উৎস এটি। এ পানীয়তে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া এটি রক্তে চিনির মাত্রা ও প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পানিতে মিশিয়ে পান করতে হয়, দীর্ঘ সময় ভিজিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। তবে অতিরিক্ত সেবনে অ্যালার্জি হতে পারে এবং ডায়াবেটিস হঠাৎ কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তিসি-পানি: কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, পাকস্থলীর প্রদাহ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, মাসিকের সমস্যাসহ ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে এটি কার্যকর। তবে দীর্ঘদিন তিসি-পানি পান করলে প্রদাহজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। এটি ইস্ট্রোজেনের মতো কাজ করে বলে হরমোনের স্বাভাবিক কার্যকলাপে পরিবর্তন আনে। গর্ভবতী মা বা যারা সন্তান নেয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের এটি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
জিরা-পানি: জিরা-পানি ফুটিয়ে সকালে খালি পেটে পান করেন। এটি হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে বেশ সাহায্য করে এবং যেকোনো ধরনের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে কার্যকর। গর্ভকালে মর্নিং সিকনেস কমাতেও ভালো কাজ করে।
মেথি-পানি: কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় থেকে ব্যবহƒত হয়ে আসছে। ক্যানসার প্রতিরোধে, টেস্টোস্টেরন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে, হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে এবং মলাশয় পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে থাকে মেথি-পানি। তবে গর্ভকালে পান করলে ঝুঁকি হতে পারে।
নাহিদা আহমেদ
পুষ্টিবিদ, গুলশান ডায়াবেটিক কেয়ার