‘সচেতন না হলে ১০টি বার্ন হাসপাতাল করেও প্রাণ বাঁচানো যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, যেকোনো ধরনের বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই নিজেদের সুরক্ষায় আরও গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে না পারলে ১০টা বার্ন হাসপাতাল করেও মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারব না। সম্প্রতি বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডসহ বেশ কিছু ঘটনায় আমরা বাস্তব প্রমাণ পেয়েছি।

গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের গ্রাউন্ড ফ্লোরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জš§বার্ষিকী উপলক্ষে ‘সিপিআর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি’ বিষয়ক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বেইলি রোডের দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের শরীর পোড়েনি। তারা শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। সে সময় তাদের যদি উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া যেত, তাদের অনেকেই বেঁচে যেতেন।

তিনি বলেন, যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি যেকোনো স্থানেই মানুষ অসুস্থ হতে পারে, হƒদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য সিপিআর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিপিআর শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে সারাদেশে কীভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করব। সিপিআর বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সঙ্গে সরকার কাজ করবে। এ কর্মসূচি আমরা যত করতে পারব, ততই মানুষের উপকার হবে। চিকিৎসকদের প্রধান কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত মহৎ কাজ। এমন আয়োজনের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমি জেনেভায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিকেও বলেছি, আমাদের দেশে সচেতনতায় বেশি জোর দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশ স্বাধীন না হলে আমরা কেউ এখানে থাকতে পারতাম না। দেশ স্বাধীন না হলে আমার মতো সামন্ত লালের জীবন উজিরপুরেই শেষ হয়ে যেত। আমাদের মধ্যে যদি ন্যূনতম মনুষ্যত্ববোধ থাকে তাহলে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা উচিত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন স্বাচিপের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ।

আলোচনা শেষে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সিপিআর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বক্তারা বলেন, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে প্রতিদিন লাখো মানুষ শপিং করতে আসে। কেউ যদি হঠাৎ হƒদরোগে আক্রান্ত হয়, আর বসুন্ধরা শপিংয়ের কর্মীরা সিপিআর সম্পর্কে জানেন, তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সহজেই বাঁচানো যাবে। এ লক্ষ্যেই স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ আয়োজনটি করেছে।

উল্লেখ্য, অনেকেই হয়তো সিনেমা ভিডিওতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়া মানুষের বুকের ওপর উঠে চাপাচাপি করার পর জ্ঞান ফিরে পাওয়ার দৃশ্যও দেখেছেন। এটিকে কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) বলা হয়। এটি জানা থাকলে আশপাশে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট বিট বা নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়া যে কারও জীবন বাঁচানো যেতে পারে।