নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত করোনা সংলাপের ২৯তম পর্বে বক্তারা সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন কঠোর আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সঞ্চালনায় ‘সুরক্ষিত জীবনের জন্য নিরাপদ সড়ক’ শীর্ষক লাইভ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অংশ নেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান এবং গ্লোবাল রোড সেইফটি অ্যাডভোকেসি ও গ্রান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাইফুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মূল প্র্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বে সড়কে প্রতি বছর প্রায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায় এবং ২ থেকে ৫ কোটি অ-প্রাণঘাতী জখম থাকে। বিশ্বে যতগুলো কারণে মানুষ মারা যায় তার মধ্যে অষ্টম কারণ হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে চালক ও পথচারী উভয়ের জন্য কঠোর বিধান যুক্ত করে কার্যকর করা হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। তবে বর্তমান আইনটির এখনও কিছু দুর্বল দিক রয়েছে, যে কারণে সড়ক ব্যবহারকারীরা আইন লঙ্ঘন ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ চলতি বছরে সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গাড়ির গতি নির্দিষ্ট করে দেয়া, চালক ও যাত্রীদের জন্য সিটবেল্ট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, মানসম্মত হেলমেটের ব্যবহার, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসন নিশ্চিত করা ইত্যাদি সংশোধিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত জরুরি।
মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে আইন মেনে চলতে হবে। তাছাড়া মানসম্মত হেলমেট ও ছিটবেল্ট ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, চালককে লাইসেন্স দেয়ার আগে ভালো করে পরীক্ষা নিতে হবে। অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে লাইসেন্স দেয়া যাবে না। আইনের পাশাপাশি প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
নাদিরা ইসলাম জলি বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হওয়ার অন্যতম কারণ আমরা আইন মেনে চলি না। যত্রতত্র ও অমনোযোগীভাবে রাস্তা পারাপার হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ উল্লেখযোগ্য। তবে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। যদি আইন সঠিকভাবে মেনে চলি, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।