নিজস্ব প্রতিবেদক: পতনের ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেও সূচক ও লেনদেন কমার মধ্য দিয়ে পার করছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহটিতে সূচক কমার সঙ্গে লেনদেন কমেছে। সে সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। এতে গত সপ্তাহে লেনদেনে শীর্ষে থাকা চার খাতের তিন খাতেই পতন হয়েছে।
আলোচ্য খাতগুলোয় গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের মধ্যে ৫৭ শতাংশ বা ৮৮০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহে পতনের মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল পাট খাত। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিরামিক খাতের শেয়ার। গত সপ্তাহে শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগ্রহের শীর্ষে থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ দশমিক ১০ শতাংশ বা ১৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিরামিক খাতে গত সপ্তাহে দর বেড়েছে ১ দশমিক ২০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৩৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড খাত। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ১০ শতাংশ বা ১৫ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে চতুর্থ স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে শেয়ারদর বেড়েছে দশমিক ৬০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বা ১৪৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। খাতটি লেনদেনের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল।
এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। এ খাতে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ শতাংশ বা ১২৩ কোটি টাকা। আলোচ্য খাতটি লেনদেনে চতুর্থ স্থানে ছিল। গত সপ্তাহে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে ভ্রমণ ও অবকাশ খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। শেয়ারদর কমার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাত। খাতটিতে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বা ৩০৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ৩০৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু এ খাতে ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক হাজার ৫৩৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে ৪৮৭ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ৫৮২ টাকা কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২২৭ দশমিক ৮২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬১ দশমিক ৬২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০৩ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির বা ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশের, কমেছে ৭৫টির বা ২০ দশমিক ১৬ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭৭টির বা ৭৪ দশমিক ৪৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ০৫ হাজার ৭৭২ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৩ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ২১ কোটি ১ লাখ ০৯ হাজার ১৭১ টাকা কমেছে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৩টির দর বেড়েছে, ৫৫টির কমেছে এবং ১৫২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।