Print Date & Time : 15 September 2025 Monday 2:33 pm

সবজির দাম স্থিতিশীল বেড়েছে ডিম ও মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সরু চালের দাম। একই সঙ্গে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামও বেড়েছে। তবে শীতের সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাজারে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে দুই-তিন টাকা বাড়তি দামে। আমন মৌসুমেও বাজারে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। শুধু মোটা চালের দাম সামান্য কমেছিল। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে সরু চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

মালিবাগ বাজারের চাল ব্যবসায়ী হালিম চৌধুরী বলেন, আমন মৌসুমের চাল বেশিরভাগই মোটা হয়। এজন্য এ সময়ে মোটা চালের দাম না বাড়লেও সরু চালের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। যদিও বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পরও বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

বাজার ও মান ভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা।

সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, শিমের কেজি এখন ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, উচ্ছের কেজি ৮০ টাকা, তাল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা। এছাড়া লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, বরবটির কেজি ১০০ টাকা, ভালো মানের প্রতি পিস লাউ ১০০ ও মাঝারি আকারের প্রতিটি লাউ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। এছাড়া নতুন আলুর কেজি ৩০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি নতুন পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। অব্যাহত রয়েছে আদা রসুনের মূল্য বৃদ্ধি। এ দুই মসলা কিনতে গুনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের দামে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। কোনো কোনো এলাকায় প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। কোথাও আবার ১২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দোকানিরা সামাজিক ও বিভিন্ন উৎসবকে দায়ী করছেন। চাহিদা বাড়ার কারণে ডিম ও মুরগির দাম কিছুটা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।

মাছ বিক্রেতারা বলছেন, মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই দামে পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীতের কারণে মাছ সরবরাহ কম হচ্ছে, ফলে মাছের দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল বাজারে কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, কই ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টেংরা ছোটগুলো ৫০০ আর বড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায়।

গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় এবং ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল মহাখালীর বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে আসা ফয়সাল হাসান বলেন, তুলনামূলক কম দাম হওয়ার কারণে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বাজারে সবচেয়ে বেশি কিনে পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া আর রুই মাছ। কিন্তু আজকের বাজারে এসব মাছের দামও বেড়েছে। ক্রেতারা আজ বাজারে এসে এত দাম বৃদ্ধি দেখে অস্বস্তিতে পড়েছেন।

একই বাজারের মাছ বিক্রেতা রুবেল মিয়া বলেন, গ্রামাঞ্চলে শীতের কারণে মাছ তুলতে পারছেন না চাষিরা। এছাড়া কুয়াশাসহ শীতের কারণে পরিবহন করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ কম, এ কারণেই মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।