সম্ভাবনার দ্বার মুক্তারপুর পঞ্চবটি দ্বিতল সড়ক

শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ আরও সহজ ও দ্রুত করতে নির্মিত হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত মুক্তারপুর-পঞ্চবটি দ্বিতল সড়ক। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এ সড়কের কাজ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছে, ২০২৬ সালের শেষের দিকে পুরো কাজ সম্পন্ন হবে। কাজ শেষ হলে খুলে যাবে স্বপ্নের দুয়ার। অবসান হবে দীর্ঘদিনের যানজট ও সীমাহীন দুর্ভোগ। একই সঙ্গে এই সড়কে যোগাযোগ এবং অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মুক্তারপুর-পঞ্চবটি দ্বিতল সড়কের কাজ। নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করতে এখন দ্বিতল সড়কে চলছে ডেক্সসø্যাব বসানোর কাজ। পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। দিনরাত প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নিরলস প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান হয়ে উঠছে দ্বিতল সড়কটির অধিকাংশ অবকাঠামো।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানায়, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানীর সহজ যোগাযোগের জন্য পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়নে পঞ্চবটি মোড় থেকে ছয় লেনে ৩১০ মিটার করে ফতুল্লা এবং নারায়ণগঞ্জ দুই দিকে প্রসারিত হবে। পাশাপাশি পঞ্চবটি মোড় থেকে শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর গোলচত্বর হয়ে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত হবে চার লেন সড়ক। এর মধ্যে পঞ্চবটি থেকে চর সৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেন সড়ক হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি দুই লেন নিচতলায়। মুক্তারপুর সেতু থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথে তিন ধরনের সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হচ্ছে ৯ দশমিক ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। নিচতলা ফ্রি হলেও দোতলা সড়কে চলাচলে লাগবে টোল।

প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হলে যানজট এড়িয়ে এই সড়কে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে বলে জানিয়ে প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মনির জানান, প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা জেলার সঙ্গে সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। চট্টগ্রাম-সিলেট থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহন ঢাকার ভেতর দিয়ে না গিয়ে এ সড়কে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের যোগাযোগ এবং অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলাকরণের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার জন্য কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে কর্মযজ্ঞ।

চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্যানডং লুকিয়াও গ্রুপ ও চায়না স্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্রার কো-অপারেশন গ্রুপ ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করবে। বর্তমানে এ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬০ শতাংশ। আগামী বছরের (২০২৬) জুনের মধ্যে সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। দুই হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ। ২০২৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই পথে যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় পাঁচগুণ। প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২০ সালে প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন হয়।