Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 2:41 am

সরকারি আমানতের অর্ধেক যাবে বেসরকারি ব্যাংকে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি আমানতের অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের অর্থের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখলে সুদ হবে ছয় শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকে রাখলে তার সুদ হবে পাঁচ দশমিক ৫০ শতাংশ।

গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি তহবিলের ৫০ শতাংশ অর্থ বেসরকারি ব্যাংকে আমানত রাখলে তাতে সুদ ছয় শতাংশ। আর বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ সর্বোচ্চ পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ সুদে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে মেয়াদি আমানত হিসেবে রাখা যাবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আগে তাদের তহবিলের ৭৫ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ও বাকি ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখত। এর আগে ২০১৮ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেসরকারি ব্যাংককে সুবিধার বিষয়ে সরকারি অর্থের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে ও বাকি ৫০ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে রাখার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।

নতুন নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকার মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়োজিত বেসরকারি ব্যাংক অথবা অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

‘তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ, পেনশন তহবিলের অর্থ এবং এন্ডাওমেন্ট ফান্ডের অর্থ এর আওতাবহির্ভূত থাকবে।’

২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রের ৬৮টি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের হাতে দুই লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা আছে। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে লাগাতে ওই অর্থ ব্যবহারে আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ার পর আমানতকারীদের সবাই যাতে সরকারি ব্যাংকের দিকে ঝুঁকে না পড়েন, তা ঠেকাতে বেসরকারি ব্যাংকে ডিপোজিটে মুনাফা বেশি থাকবে। যদি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যাংকে ডিপোজিটের ক্ষেত্রে যদি সুদহার ছয় শতাংশ করে দেওয়া হয়, তাহলে সবাই সরকারি ব্যাংকে টাকা রাখবে। তাই সরকারি ব্যাংকে ডিপোজিটের সুদহার হবে সাড়ে পাঁচ শতাংশ ও বেসরকারি ব্যাংকে ডিপোজিটের ক্ষেত্রে সুদহার হবে ছয় শতাংশ। দুই জায়গায় ছয় শতাংশ হলে, বিভিন্ন কারণে সবাই চলে যাবে সরকারি ব্যাংকে। এজন্য আমরা এক্ষেত্রে আধা শতাংশ পার্থক্য রাখছি।

এর আগে ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল সরকারের নিজস্ব অর্থের ৫০ শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রাখার বিধান রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে ওই প্রজ্ঞাপনে আমানত রাখার ওপর সুদহার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। এমনকি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে সুদের পার্থক্যও রাখা হয়নি। নতুন প্রজ্ঞাপনে এগুলো স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।