Print Date & Time : 17 August 2025 Sunday 5:49 am

সরকারি পাটকলে লোকসান ঘুচাতে নতুন ফর্মুলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ‘লোকসানি’ অপবাদ ঘুচাতে নতুন ফর্মুলা দিয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়ক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ সভাপতি ফজলুল হক মন্টু। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ নতুন ফর্মুলা তুলে ধরেন।

কারখানাগুলোয় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে বিজেএমসি আত্মনির্ভরশীল হবে ও সরকারের আনুকূল্য ছাড়াই ব্যবসায়িক নিয়মে পরিচালিত হতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

ফজলুল হক মন্টু জানান, শত বছরের পুরোনো স্কটল্যান্ড টেকনোলজি পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে পরিবর্তন করা যেতে পারে। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোয় শত বছরের পুরোনো যন্ত্রপাতির বদলে আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিত করলে এ খাতের সংকট দূর হবে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এক সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান বিজেএমসি আজ লোকসানি প্রতিষ্ঠানের অপবাদ নিয়ে ধুঁকছে। এ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ২৬ হাজার স্থায়ী শ্রমিক, কয়েক লাখ বদলি শ্রমিক ও কয়েক কোটি কৃষক পরিবার চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনযাপন করছে।

তিনি জানান, বর্তমানে বিজেএমসি পরিচালিত ২২ কারখানায় হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি এ তিন ধরনের মোট ১০ হাজার ৮৩৫টি তাঁত রয়েছে। এসব কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৭৩ মেট্রিক টন। এগুলো পুরোনো হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, এগুলো সংস্কার করলেও কয়েক দশকের পুরোনো যন্ত্রপাতির উৎপাদন ক্ষমতা খুব বেশি বাড়বে না। তাই বিজেএমসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হলে কারখানাগুলোর পুরোনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় তাঁত প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করে মাথাপিছু ব্যয় কমানোর কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, ছয় হাজার ২৩২ হেসিয়ান তাঁতের পরিবর্তে আধুনিক চায়নার বিভিন্ন মডেলের তিন হাজার তাঁত স্থাপন করে সমপরিমাণ উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া তিন হাজার ৬৯৬ সেকিং তাঁতের পরিবর্তে দুই হাজার আধুনিক তাঁত স্থাপন এবং ওই দুই ধাপের সাফল্যের পর স্পিনিং, ড্রয়িং, প্রিপারিং ও বেচিং বিভাগের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের মাধ্যমে তৃতীয় ধাপটি সম্পন্ন করা যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কপ নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সভাপতি শাহ মো. আবু জাফর, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক আমিন, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম আরা প্রমুখ।