সরকারের ক্ষমতা হারানোর ভয় পেয়ে বসেছে: রিজভী

প্রতিনিধি, রাজশাহী : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ক্ষমতা হারানোর ভয় সরকারকে পেয়ে বসেছে বলে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের কাণ্ডজ্ঞান নেই। যাদের পক্ষে জনগণ থাকে না তারা অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে। তারা আজ আমাদের সাথে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে।’

রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর মালোপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো জনগণের বাহিনী। এটা কারও পেটোয়া বাহিনী হতে পারে না। জনগণের ওপর যদি সরকার এভাবে দমননীতি চালায়, তাহলে সকল কিছু পরাজিত হবে জনগণের শক্তির কাছে।’

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, ‘গত কয়েকদিনে রাজশাহীসহ সারাদেশে বিএনপির ৬৮০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৫ হাজারের অধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এত ভয় কিসের? একটা নিঃশব্দ, বোবা পরিস্থিতি তৈরি করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এ জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা মামলার খড়গ চালানো হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে।’

রিজভী জানান, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের নামে রাজশাহীতে মামলা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফাসহ স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদাকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন ব্যক্তির নামে গায়েবী মামলা দেয়, যিনি দুইবছর আগে মারা গেছেন। হজ পালন করতে গেছেন, তার নামেও মামলা হয়। এসব মামলা যে মিথ্যা সেটা তারা নিজেরাই প্রমাণ করে।’

রাজশাহীতে দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুদ্ধকালীন মহড়ার মতো অস্ত্র নিয়ে বিএনপি কার্যালয়কে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো। আমাদের নেতাকর্মীরা কি অস্ত্র নিয়ে কর্মসূচি পালন করছিল? সংবিধান কাটছাট করার পরও যতটুকু অধিকার আছে, তাতে বিএনপি এই কর্মসূচি পালন করতে পারে। সবচেয়ে নজিরবিহীন ঘটনা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিএনপি কার্যালয়ে তালা দিয়ে দেওয়া। আমরা তো এরশাদ সরকারের আমলে আন্দোলন করেছি। এখানে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু কারও দলীয় কার্যালয়ে পুলিশ গিয়ে তালা দিচ্ছে এই দৃষ্টান্ত আমরা দেখিনি।’

রিজভী বলেন, ‘১৪ বছর ধরে যে অনাচার, অবিচার-অন্যায় করে বিরোধীদল শূন্য যে অবস্থার সৃষ্টি করা হচ্ছে, আমরা তার অবসান চাই। শেখ হাসিনার শাসনের আমরা অবসান চাই। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেখানে জনগণ যাকে ভোট দেয় সে ক্ষমতায় আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা। সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ সঞ্চালনা করেন। উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।