নিজস্ব প্রতিবেদক:‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা এই পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন। তবে এর বেশি বয়সীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ৬০ বছরের পর থেকে এ পেনশন কার্যকর হবে।’
পেনশনের জন্য মাসে কত টাকা জমা রাখতে হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রিমিয়ামের বিষয়টি পরে বিধিমালায় নির্ধারিত হবে।’
সাংবাদিকদের আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ৬০ বছর থেকে আমৃত্যু একজন ব্যক্তি এই পেনশন সুবিধা পাবেন। কিন্তু কেউ যদি ৭৫ বছর বয়সের আগে মারা যান, তবে তার নমিনিকে তার বয়স ৭৫ হওয়া পর্যন্ত পেনশন সুবিধা দেয়া হবে। যেমন পেনশন সুবিধা পাওয়া কেউ ৬৫ বছরে মারা গেলে তার নমিনি ৭৫ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ আরও ১০ বছর পেনশন সুবিধা পাবেন। আর কেউ ৭০ বছর বয়সে মারা গেলে তার নমিনি আরও ৫ বছর (৭৫ পর্যন্ত) পেনশন সুবিধা পাবেন।
টাকা জমা দেয়া শুরু করে ৫০ বছরের আগে কেউ মারা গেলে সে ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কেউ মারা গেলে তার জমা টাকা মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে। যেমন ১৮ বছর থেকে টাকা জমা শুরু করে ৩০ বছরে কেউ মারা গেলে, পূর্বের ১২ বছরের পুরো টাকা তার নমিনিকে মুনাফাসহ দিয়ে দেয়া হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে নির্ভরশীল মানুষের বর্তমান হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে ৫৮ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে। ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে সরকারি চাকরি করছেন মাত্র ১৪ লাখ মানুষ। এসব সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পেনশন সুবিধা রয়েছে। বাকি ১৮ থেকে ৫০ বছরের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি, বেসরকারি খাত, ব্যবসায়ী কিংবা অন্যান্য পেশায় জড়িত রয়েছেন। এদের কোনো পেনশন সুবিধা নেই। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে পেনশনের আওতায় আনতেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত।