নিজস্ব প্রতিবেদক: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য হিসেবে মূলত জর্দা, গুল ও সাদাপাতা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর বাজারে এসব পণ্য বিড়ি-সিগারেটের চেয়েও সহজলভ্য। নারীদের মধ্যে ধূমপায়ীর হার কম হলেও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। ফলে নারীদের মধ্যে বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠি তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁঁকির মধ্যে রয়েছে।
রোববার তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত একাডেমির সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত ‘পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ী নারী ও শিশুরাও মারাত্মক স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাবলিক প্লেস ধূমপানমুক্ত, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করায় ২০০৯ সালের (৪৩.৩ শতাংশ) তুলনায় বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১৭ সালে (৩৫.৩ শতাংশ) আট শতাংশ কমেছে।
তিনি আরও বলেন, ধূমপান ও তামাক সেবনের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রতিবছরে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে পৃথিবীতে প্রতিবছর ১২ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে, যাদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়। এসব রোগাক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় হয় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা যা তামাক খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চাইতে বেশি। ১৫ বছরের উর্ধ্বে জনগোষ্ঠির মধ্যে পরিচালিত গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ (৪৬ শতাংশ পুরুষ ও ২৫.২ শতাংশ নারী) তামাক সেবন করে। ১৮ শতাংশ বা ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ (পুরুষ ৩৬.২ শতাংশ ও নারী ০.৮ শতাংশ) ধূমপান করে। ২০.৬ শতাংশ বা ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ (পুরুষ ১৬.২ শতাংশ ও নারী ২৪.৮ শতাংশ) ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দপ্তর-সংস্থা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদক ও তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও জোরদার ভূমিকা পালন করবে বলে সেমিনারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা।