ক্রীড়া প্রতিবেদক: বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। ইমার্জিং দল, ‘এ’ দল কিংবা জাতীয় কোনো দলই গত তিন মাসে তেমন সুখবর দিতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবে একটা গুমোট ভাব তৈরি হয়েছে। যে কারণে বেশ অমূলক কথাও শুনতে হচ্ছে টাইগারদের। তবে সাকিব আল হাসান বিশ্বাস করেন, একটি জয়ই এসব বদলে দিতে পারে। এ জন্য আজ থেকে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে এ অলরাউন্ডারের ভাবনায় শুধুই একটি শব্দ জয়।
গত বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান ছিলেন দারুণ ধারাবাহিক। কিন্তু সতীর্থদের বাজে ফর্মের কারণে বৈশ্বিক ওই টুর্নামেন্টে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। এদিকে গেল শ্রীলঙ্কা সিরিজেও সেই ব্যর্থতা কাটাতে পারেনি টাইগাররা। উল্টো তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়ে ফিরতে হয় মুশফিকুর রহিমদের। এদিকে ইমার্জিং দল সিরিজ হারছে শ্রীলঙ্কার কাছে, ‘এ’ দল সিরিজ হারছে আফগানদের কাছে। ভারত সফরে ফাইনালে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাদশ। তবে ব্যাপারগুলো এখন অতীত। তাই সেগুলো আর মনে করতে চাইছেন না তারা। সবার চোখ এখন ঘরের মাঠে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টে। এ জন্য গত দুই সপ্তাহ কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-তাসকিন আহমেদরা।
চলতি বছর ঘরের মাঠে আজই প্রথম টেস্টে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। আগামী নভেম্বরে ভারতের মাটিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচ খেলবে টিম টাইগার্স। তার আগে আফগানদের বিপক্ষে এ টেস্টে জিততে চাইছেন সাকিব, ‘গত ক’দিনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সময়টা ভালো কাটছে না। হাইপারফরম্যান্স দল, ‘এ’ দল কোথাও আমরা খুব একটা ভালো করতে পারেনি। শুধু অনূর্ধ্ব-১৯ ইংল্যান্ডে ফাইনাল (ত্রিদেশীয় সিরিজে) খেলেছে। এই টেস্ট আমাদের কাছে তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ, খুব ভালোভাবে জিতলে অনেক কিছু আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।’
একটা জয়ই পারে সব নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিতে। আবার ফলটা উল্টো হলে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হবে টাইগারদের। ব্যাপারটি নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন সাকিব। তার চোখ শুধুই জয়ে, ‘(আফগানিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে জিতলে) প্রশংসা হয় না এটা মনে হয় ভুল ধারণা। আমরা ক্রিকেটাররা জানি এটা কত বড় ম্যাচ, জিততে হলে কতটা ভালো করতে হয় ও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আমরা নিজেদের সেভাবেই উৎসাহিত করি। মানুষ কিংবা আপনারা কতটা প্রশংসা করেন না করেন, এটা আমাদের কাছে বড় ব্যাপার নয়। ১ রানে জিতলেও সেটি জয়, ১০০ রানে জিতলেও তা-ই। ১ উইকেট হোক বা ১০ উইকেট, জয় তো জয়ই। জেতাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
সাকিব চাইলেই কি জিতবে বাংলাদেশ? এ জন্য তো নিজেদের সেরা শক্তি প্রদর্শন করতে হবে। সেটা নিশ্চয়ই স্পিন? কিন্তু সমস্যা হলো স্পিন যে এই আফগানিস্তান দলেরও বড় শক্তি। এক অর্থে মূল শক্তি। তারপরও চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ ঝুঁকিটা নিচ্ছে। কারণ একটাই জিততে হবে এই টেস্ট।
চট্টগ্রামে আজ হয়তো একজন পেসার নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ। বাকি কাজ সামলাতে দায়িত্ব থাকতে পারে স্পিনারদের কাঁধে। পাঁচ দিনের ম্যাচে এমন একাদশ সাজালে তো সমালোচনা ওঠার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ব্যাপারটিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না সাকিব, ‘যখন ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় খেলা হয়। ওরা অনেক সময় চার সিমার নিয়ে খেলে। একাদশে কোনো স্পিনার খেলে না। কই, সেগুলো নিয়ে তো আমরা সমালোচনা করি না। আমার কাছে মনে হয় না এগুলো নিয়ে চিন্তা করার কিছু আছে। আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে একদমই ভাবি না। আমাদের চিন্তা একটাই ম্যাচটা জেতার। সেটি যদি দুজন বা তিনজন সিমার নিয়ে খেলতে হয়, খেলব। একজন সিমার নিয়ে খেলতে হলেও খেলব। যেটাই আমরা পরিকল্পনা করব, সেটিতেই অটল থাকার চেষ্টা করব। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করব।’
