প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খাজরা ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান, কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গদাইপুর যাওয়ার পথে পরাজিত প্রার্থী অহিদুল ইসলাম তার আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়ে এবং তার বাড়ির ছাদ থেকে ইটপাটকেল ছোড়ে। সেখানে রাসেল হোসেন (২৪),আসাদুল ইসলাম (৫০), ওয়াদুদ সরদার (৫০), নূরবক্স সরদার (৫৫), আসলাম কাদির (৪০), ফিরোজ হোসেন (৩৫), সাজিত (১৪), শহিদ সরদার (৪৫) ইমান হোসেন (৩৫), হাফিজুর রহমান (৪৫) সহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত সবাই খাজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
আহতদের মধ্যে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসাদুল ইসলাম ও রাসেল হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক। রাসেলকে দুপুরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে পরাজিত প্রার্থী অহিদুল ইসলাম গুলি ছোড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নির্বাচনে একটি সেন্টারে কারচুপি করে আমাকে পরিকল্পিত ভাবে ফেল করানো হয়েছে। এরপর ৫ জানুয়ারি রাত থেকে চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও তার কর্মী সমর্থকরা আমার বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালায়। সকালে আশাশুনি নির্বাচন অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে আমার বাড়িতে আবারও হামলা চালায় এবং গেট ভেঙে ঢোকার সময় জীবন বাঁচাতে আমি আমার লাইসেন্সকৃত সটগান দিয়ে ছাররা গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়েছি। তা না হলে সে এবং তার লোকজন সহিংসতা চালিয়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করতো এবং আওয়ামী লীগ নেতা শরবতকে যে ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছিল, একই ভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যা করতো। ডালিম তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়ীতে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে র্যাব ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, খাজরা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী অহিদুল ইসলামের একটি কেন্দ্রে ভোট গননায় গরমিল হয়েছে দাবি করতে আজ সকালে নির্বাচন অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হন। পথিমধ্যে গদাইপুর ব্রীজের নিকট পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের লোকজন মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। তখন তিনি গাড়ী ঘুরিয়ে তার নিজ বাড়ীতে চলে আসেন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের লোকজন তার বাড়ীতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং হামলা চালিয়ে বাড়ীর গেট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। তখন অহিদুল ইসলাম আত্মরক্ষার্থে তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন। এসময় ৪ থেকে ৫ জন আহত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম নৌকা প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ৬২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অহিদুল ইসলাম আনারস প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ২১৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।