Print Date & Time : 18 August 2025 Monday 4:49 pm

সাতক্ষীরায় হলুদের বাম্পার ফলন

ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় এবার হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় হলুদ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৫০০ টন। উৎপাদিত হয়েছে ৯ হাজার ৯৬০ টন হলুদ।

জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লবণাক্ত পানি তুলে চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও হলুদের দাম কমে যাওয়া, তালা ও কলারোয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধতার কবলে পতিত থাকায় হলুদচাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। ফলে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নেন হলুদ চাষে। তবে উন্নত জাতের হলুদ বীজ এবং লবণাক্ত এলাকায় চাষ উপযোগী হলুদের জাত বাজারে আসায় এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন ও হলুদের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় হলুদের আবাদ বাড়ছে। এছাড়া চাষিরা হলুদের সঙ্গে একই জমিতে ঝাল গাছ, বেগুন, মেটে আলু ও ওলের চাকি চাষ করছেন। ফলে অধিক লাভ হওয়ায় হলুদ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৫৭৮ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদের লক্ষ্য ছিল। এর মধ্যে রয়েছে সদরে ১২০ হেক্টর, কলারোয়ায় ৯০, তালায় ২৮৬, দেবহাটায় ১৫, কালীগঞ্জে ১০০, আশাশুনিতে ১৫ ও শ্যামনগরে ৪৩ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৮৬ হেক্টর বেশি জমিতে হলুদ আবাদ হয়েছে। উৎপাদিত হয়েছে ৯ হাজার ৯৬০ টন হলুদ। এর মধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ৮০০, কলারোয়ায় এক হাজার ৩৫০, তালায় চার হাজার ২৯০, দেবহাটায় ১৫০, কালীগঞ্জে এক হাজার ৫০০, আশাশুনিতে ১৫০ ও শ্যামনগরে ৬৪৫ টন হলুদ উৎপাদিত হয়েছে।

তালা উপজেলার খলিষখালী গ্রামের আবদুল গফুর শেখ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হলুদ আবাদ করে আসছেন। তবে কয়েক বছর ধরে হলুদ আবাদ কমিয়ে ফেলেছেন। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো আর উৎপাদন হয় না। ফলে হলুদ আবাদ করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ কারণেই এলাকার কৃষক হলুদ আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তবে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এ বছর চাষিরা হলুদ চাষে আগ্রহ দেখান।

কয়েকজন চাষি জানান, সমন্বিত চাষের মাধ্যমে একই জমিতে হলুদের সঙ্গে কয়েক ধরনের সবজির চাষ করা যায়। ফলে তদারকিসহ হলুদ চাষে খরচ অনেক কম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কাজী আবদুল মান্নান জানান, হলুদ লাভজনক ফসল। সাতক্ষীরায় প্রতি হেক্টরে ১৫-১৬ টন পর্যন্ত হলুদ উৎপাদিত হয়। কিন্তু উপকূলীয় জেলা হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে এখানকার আবাদি জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ দুই কারণে জেলার কৃষকরা হলুদ আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে অধিদফতরের পক্ষ থেকে কৃষকদের হলুদ আবাদের ক্ষেত্রে সবসময় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলে এ বছর আবাদ বেড়েছে।