নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশেষ বার্তা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন। আবার নির্বাচনে তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সেটাই যদি মনে করেন যে তিনি নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তাহলে তো আর নির্বাচনের প্রয়োজনই নেই। সেটাই তারা চাচ্ছে। কিন্তু এটা তো জনগণের কথা নয়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের কথা একটাই, আর পারছি না। এই সরকার যদি আর ক্ষমতায় থাকে, শেখ হাসিনা যদি আবার প্রধানমন্ত্রী হয় তাহলে তো আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। এটাই হচ্ছে বাস্তব কথা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘গণতন্ত্র রক্ষা ও একদফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন মনির ভূমিকা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে জাতীয়বাদী সমমনা জোট।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আমাদের চিন্তা করতে হয় এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এমনকি পাকিস্তানেও একটা সিস্টেম তৈরি করে ফেলেছে সেখানে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। নেপাল, মালদ্বীপ তারাও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ফেলেছে। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছেÑআমরা কেন পারছি না? কারণ একটাই আওয়ামী লীগ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটা দল যারা সব সময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের আগে তারা মানুষকে সুন্দর-সুন্দর কথা বলেন, তাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়ে যায়, দুর্ভাগ্য যে নির্বাচনের পরে ওই মানুষগুলো গান গায় আগে জানলে তো ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় রয়েছে, দেশে কখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে নাÑওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তাহলে এটা নিয়ে ১৭৩ দিন হরতাল কেন করেছিলেন? এতগুলো মানুষকে কেন হত্যা করেছিলেন? একটাই উদ্দেশ্যÑক্ষমতায় যাওয়া।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধয়াক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের দলের (বিএনপি) নেতা-মন্ত্রীরা প্রথম দিকে বলেছে, না এটা আমরা মানব না। তারপরে মেনে নিয়েছেন। কেন নিয়েছেন? খালেদা জিয়া জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা মেনে নিয়েছেন। যেহেতু সংসদের ম্যানডেট লাগবে সেই কারণে নির্বাচন করে এক রাতের মধ্যে সেই আইন পাস করা হয়েছে। কেন? জনগণের স্বার্থে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ যেহেতু আওয়ামী লীগ জানে সুষ্ঠু ভোট হলে, জনগণ ভোট দিতে পারলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তাই তারা সংবিধানকে অবৈধভাবে কেটে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। এখন যে সংবিধান রয়েছে তা বর্তমান সংসদ নির্বাচনের সময় তো থাকবেই, নির্বাচনের পরে নতুন সংসদ না হওয়া পর্যন্ত থাকবে। অর্থাৎ তারা (আওয়ামী লীগ) থাকবেই।
বিএনপি সচেতনভাবে এখনও সংঘাতমূলক কর্মসূচি দেয়নিÑউল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আশা করছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা পদত্যাগ করবে। নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে। দেশকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করবে। এটা শুধু আমরা চায়, তা নয় বিদেশিরাও চায়। এটা খুব পরিষ্কার আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহান।