সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষে ওঠে এসেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশান লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
ডিএসইতে সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বা ১০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৩ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা। দিনজুড়ে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৯টি শেয়ার মোট ১১২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর ৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

এদিকে সম্প্রতি ‘বি’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবনমিত হয়েছে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশানস লিমিটেড। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটি যথাসময়ে বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) আয়োজন করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের কোম্পানির শেয়ারের ক্যাটেগরি পরিবর্তন হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক জারি করা নিয়ম অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোনো সিকিউরিটির ক্যাটেগরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত ক্যাটেগরিতে ওই সিকিউরিটি ক্রয়ের জন্য মার্জিন ঋণ প্রদানে প্রথম ৩০ দিন নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য এক শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু যথাসময়ে কোম্পানিটি এজিএম করতে ব্যর্থ হয় এবং ওই লভ্যাংশ অনুমোদন না পাওয়ায় শেয়ারহোল্ডাররা এ লভ্যাংশ পায়নি। তাই তাদের শেয়ার ক্যাটেগরি পরিবর্তন করা হলো। অন্যদিকে চলতি মূলধনের ঘাটতি থাকায় গত বছরের অক্টোবর থেকে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর কারণ হিসেবে গত নভেম্বর মাসে কোম্পানিটির পরিচালক শাহীন আক্তার চৌধুরী ডিএসইকে জানায়, কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান দেশে না থাকায় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ব্যাংকের চেক সিগনেচার না হওয়ায় লেনদেন করাও সম্ভব হচ্ছে না। এসব কিছু বিবেচনায় কোম্পানিটির কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

২০১২ সালে পুঁজিবাজারে আসা কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৪৯৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ৬৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ ৭৪ হাজার ৫৫৫। মোট শেয়ারের মধ্যে ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের হাতে, ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক এবং ৬২ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। এদিকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ পয়সা এবং ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৮৮ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১০ পয়সা। এর আগে কোম্পানিটি ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক পয়সা। আর ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯১ পয়সা। এছাড়া ওই সময়ে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে দুই পয়সা। এর আগে সর্বশেষ ৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল এক টাকা এক পয়সা এবং ২০১৮ সালের ৩০ জুনে তাদের শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছিল ১২ টাকা ৬০ পয়সা। আর ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৪৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।