নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯১টি শেয়ার ৯৬ কোটি ২৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের চার দশমিক ৯২ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর সাত দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে এ কোম্পানির শেয়ারদর এক দশমিক ৩৮ শতাংশ বা চার টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৩৬০ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৩৫৯ টাকা ৪০ পয়সা। দিনজুড়ে তিন লাখ ৭৫ হাজার ৩০৯টি শেয়ার এক হাজার ৬৩৯ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৩৫৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩৬৪ টাকায় ওঠানামা করে। গত এক বছরে শেয়ারদর ২৮৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৪১৯ টাকা ৯০ পয়সায় ওঠানামা করে।
কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত অর্ধবার্ষিকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবদেন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৯০ শতাংশ বা করপরবর্তী মুনাফার ৬৭ শতাংশ (শেয়ারপ্রতি ৯ টাকা) হারে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা দেয়। আর ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য মোট ২৮০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। ২০১৮ সালের করপরবর্তী মুনাফার ১০৮ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ আগেই পরিশোধ করা হয়েছিল। সমাপ্ত হিসাববছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় হয় ২৬ টাকা শূন্য চার পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৩১ টাকা ৩৮ পয়সায়, যা আগের বছর একই সময়ে হয়েছিল ২০ টাকা ৩১ পয়সা ও ২৬ টাকা শূন্য এক পয়সা।
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ২০৫ শতাংশ নগদ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ২০ টাকা ৩১ পয়সা ও এনএভি ২৬ টাকা এক পয়সা। এটি তার আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে ১৬ টাকা ৬৮ পয়সা ও ২৪ টাকা ৮৬ পয়সা।
কোম্পানিটি ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করেছে। চার হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ১২৩ কোটি ২৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ১৩৫ কোটি তিন লাখ ২২টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকের কাছে রয়েছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর তিন দশমিক ৯৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর তিন দশমিক ৯৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে দুই দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১৩ দশমিক ৮০ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ১৩ দশমিক ৪৪।
আর লেনদেনের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৩৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৩৩টি শেয়ার ৬১ কোটি ৬৬ লাখ ৭২ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ১৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর পাঁচ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহের শেষদিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দশমিক ৯৫ শতাংশ বা তিন টাকা ২০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৬১ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ১৬৩ টাকা ৯০ পয়সায়। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১৬০ টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৭১ টাকায় হাতবদল হয়। ওইদিন কোম্পানিটির ৯ লাখ ১৩ হাজার ৮৫৩টি শেয়ার মোট তিন হাজার ৬৪১ বার হাতবদল হয়, যার মোট মূল্য ছিল ১৫ কোটি ২৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১৭৮ টাকায় ওঠানামা করে।
‘এ’ ক্যাটেগরির ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে দুই টাকা পাঁচ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯৩ টাকা ৬২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে দুই টাকা ৮৬ পয়সা লোকসান ও ২১৫ টাকা ২০ পয়সা। আর ২০১৮ সালে লোকসান করেছে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা তার আগের বছর একই সময় লোকসান ছিল সাত কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩১ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৫২৫ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট তিন কোটি ১৬ লাখ ৫৬ হাজার ১৮৫টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকের কাছে শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, সরকারি ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল ফরচুন শুজ লিমিটেড। কোম্পানিটির এক কোটি ৭৮ লাখ ৫৯ হাজার ৪৫২টি শেয়ার ৫৬ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৮৮ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১২ দশমিক ৯১ শতাংশ কমেছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর সাত দশমিক ৩০ শতাংশ বা দুই টাকা ৩০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ২৯ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ২৯ টাকা। ওইদিন ১১ কোটি ১৯ লাখ ছয় হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
